Search
Close this search box.
Search
Close this search box.
north-korea
ফাইল ছবি

১৯৯৪ সালের কথা। বাংলাদেশ থেকে ৬১ লাখ ৪০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য কেনে উত্তর কোরিয়া। দেশটির কাছে ডলার না থাকায় বার্টার বা পণ্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে হয় এই বাণিজ্য। ওই সময় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন সাইফুর রহমান। তখন উত্তর কোরিয়া বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিলেও চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে তার দাম কিংবা বিনিময়ে কোনো পণ্য এখনো সরবরাহ করেনি।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উত্তর কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসাবে কাজ করেন। তিনি অনেকবার তাগাদা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। এখন সেটি সুদে আসলে ১ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার হয়েছে। অবরোধের বোঝা আর ডলার না থাকায় উত্তর কোরিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য খুবই সীমিত। বলতে গেলে তাদের সম্পূর্ণ বাণিজ্য এখন চীনের সঙ্গে।

chardike-ad

১৯৭১ সালের পর আমরাও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করেছি বার্টারের মাধ্যমে। ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ যখন শত্রু মুক্ত হল সেই দিনই পাকিস্তান জানিয়ে দিল পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গচ্ছিত রিজার্ভের বিদেশি মুদ্রার এক কনাও বাংলাদেশ পাবে না। অর্থাৎ বাংলাদেশের হাতে তখন ছিল শূন্য বিদেশি মুদ্রা। সেই কারণে সেই থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত আমাদের অতি কষ্টে বার্টার ব্যবস্থায় পণ্য ক্রয় করতে হত। আমাদের পণ্য বলতে পাট চা ও কিছু চামড়া ছিল তখন। লোক ছিল সাড়ে ৭ কোটি। দেশে খাদ্য উৎপাদন হত ৫ কোটি মানুষের জন্য। ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষের খাদ্য বিদেশ থেকে সাহায্য ও এই বার্টার ব্যবস্থায় আনা হত। আজ গার্মেন্টস শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। তখন কাপড় তৈরির কারখানাও ছিল না। কাপড় সম্পূর্ণ বিদেশ থেকে আনতে হত। তাঁতের কাপড় তৈরি জন্য তুলা বিদেশ থেকে আনতে হত।

হাজার হাজার কোটি টাকার ওষুধ আমরা বিদেশে রফতানি করছি এখন। দেশের তৈরি ওষুধ আজ আমাদের ৯৮% প্রয়োজন মিটাচ্ছে। তখন ২% ও প্রয়োজন মেটাতে পারতাম না দেশীয় উৎপাদন দিয়ে। এত কঠিন সময় পার করলেও বাংলাদেশ কোনোদিন খেলাপি হয়নি। উত্তর কোরিয়ার মতো খেলাপি বহু দেশের কাছে বাংলাদেশের পাওনা আছে। তারা এটোম বোমা বানাচ্ছে, আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে।

আজ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫০৯ কোটি ডলার। আর পাকিস্তানের ১০০৯ কোটি ডলার। উত্তর কোরিয়া আর পাকিস্তানের থেকে বাংলাদেশে অর্থনীতি যে অনেক শক্তিশালী অবস্থায় আছে সেটা কারো অজানা নয়।