চিকিৎসা ও অন্যান্য উদ্দেশ্যে গিয়ে লকডাউনের কারণে ভারতে আটকে পড়া আরও ৪৮২ জন বাংলাদেশিকে তিনটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। এর মাধ্যমে ভারত থেকে দেশে ফেরানোর ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার তৃতীয় পর্যায়টি সম্পন্ন হলো বলে জানিয়েছে নয়া দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। গত ২০ এপ্রিল থেকে ভারত সরকারের সহযোগিতায় এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দিল্লি হতে ১৪৯ জন ও ইউএস বাংলার অপর ফ্লাইটে চেন্নাই হতে ১৬৫ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরছেন। এছাড়া, এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে চেন্নাই হতে আরো ১৬৮ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
গত তিন সপ্তাহে দিল্লি, চেন্নাই, মুম্বাই, কলকাতা ও বেঙ্গালুরু হতে মোট ২৫টি ফ্লাইটে সাড়ে ৩ (তিন) হাজারের অধিক আটকে পড়া বাংলাদেশি আকাশপথে দেশে ফিরেছেন। ভারতে আটকে পড়াদের অধিকাংশই ছিলেন চিকিৎসার জন্য যাওয়া রোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য। এছাড়াও ভারতের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও পর্যটকরাও এই সময়ে দেশে ফিরেছেন।
হাইকমিশন জানায়, আকাশপথের পাশাপাশি সড়কপথেও প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। লকডাউন শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন স্থল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ মিশনসমূহের সহায়তায় সহস্রাধিক যাত্রী দেশে ফিরেছেন। গত দুই সপ্তাহে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, কর্ণাটকসহ বিভিন্ন দূরবর্তী রাজ্য হতে সড়ক পথে প্রায় ৫ (পাঁচ) শতাধিক বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন বা দেশের পথে রয়েছেন।
যারা সড়কপথে দেশে ফিরতে চান, তাদেরকে অবিলম্বে হাইকমিশনের বিজ্ঞপ্তি-৯ (৩০ এপ্রিল ২০২০) অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য হাইকমিশনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সড়কপথে দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রে রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে চিকিৎসকের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।
ভারতস্থ বাংলাদেশ মিশনগুলো প্রত্যাবর্তনেচ্ছু বাকি সকল বাংলাদেশিকে দেশে ফেরানোর জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অধিকাংশের দেশে ফেরার পরও বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন শহরে রয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের সঠিক সংখ্যা জানা গেলে তা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে। কেননা, কোনো নির্দিষ্ট শহর থেকে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা বা অন্য কোনো মাধ্যমে যাত্রার ব্যবস্থা করার জন্য ন্যূনতম/নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী প্রয়োজন।
এমতাবস্থায়, যে সকল বাংলাদেশি এখনো ভারতে আছেন এবং দেশে ফিরতে আগ্রহী তাদেরকে নাম, পাসপোর্ট নম্বর, বর্তমান অবস্থান, ফেরার প্রস্তাবিত তারিখ ও ভ্রমণ শুরুর স্থান-সহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি হাইকমিশনে (ফেসবুকে সংযুক্ত এ সংক্রান্ত ফর্মটি পূরণ করে) অবিলম্বে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেছে হাইকমিশন। প্রয়োজনে এসব তথ্য ই-মেইলে (mission.newdelhi@mofa.gov.bd)-ও পাঠানো যাবে। ই-মেইলে যেকোনো তথ্যাদি প্রেরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যক্তির নাম, অবস্থান ও যোগাযোগের জন্য স্থানীয় ফোন নম্বর উল্লেখ করতে হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের আরো দায়িত্বশীলতার সাথে পারস্পরিক সম্মান রক্ষা ও দু’দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মিশন জানিয়েছে, দেশে ফিরতে ইচ্ছুক প্রত্যেক যাত্রীকে অবশ্যই ‘কভিড- ১৯ মুক্ত’ বা ‘কভিড -১৯ উপসর্গমুক্ত’ সনদ থাকতে হবে। সকল যাত্রীকে বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর পুনরায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং বাধ্যতামূলক ২ (দুই) সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।