Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

korea-coronaমধ্য ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল করোনার হানা। সম্ভবত চীনের বাইরে সিঙ্গাপুরের পর দক্ষিণ কোরিয়াই দ্বিতীয় রাষ্ট্র, যারা করোনার শিকার হয়। এরপর থেকে টানা দুই আড়াই মাস পর প্রথম কোনো করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুবিহীন দিন কাটাল দক্ষিণ কোরিয়ানরা। অবশ্য চারজন নতুন সংক্রমিত পাওয়া গেছে। কিন্তু আক্রান্তরা বাইরে থেকে এসেছেন এবং তারা আইসোলেশনে আছেন। এদের নিয়ে অবশ্য দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৭৬৫ জনে।

যে দেশটি প্রথম দিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় করোনা হটস্পট হয়ে উঠেছিল, সে দেশটার এরকম সাফল্য একটা মাইলফলকই বটে। অথচ এ জন্য তাদের বড়ধরনের কোনো লকডাউনের মধ্য দিয়েও যেতে হয়নি। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে উন বলেন, এটা হলো দক্ষিণ কোরিয়া ও তার নাগরিকদের শক্তি।

chardike-ad

কীভাবে সম্ভব হলো এই কঠিন ও ভয়ঙ্কর মহামারি থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখাটা? ফেব্রুয়ারিতে দায়েগু নামের একটি শহরে একটি ধর্মীয় গ্রুপের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। এর পর তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। একই সঙ্গে সরকারও নেমে পড়ে সংক্রমণ ঠেকাতে। বিনামূল্যে সংক্রমণ পরীক্ষাসহ নানা কার্যক্রম হাতে নেয়। সারা দেশে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিনামূল্যে প্রচুর টেস্ট করা হয় এবং অসংখ্য রোগীও শনাক্তও করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে সরকার আক্রান্তদের আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে তাদের যথাসাধ্য চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেয়া হয়।

korea-coronaএরপরও আক্রান্তের খোঁজে দেশব্যাপী ব্যাপক তল্লাশি চালায় তারা। আক্রান্তদের সঙ্গে যাদের মেলামেশার সম্ভাবনা ছিল, এমন লোকদের খুঁজে বের করে তাদেরও পরীক্ষা করা হয়। কাউকে আক্রান্ত পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষ আক্রান্তদের সঙ্গে কাছাকাছিদের ওপর নজরদারি শুরু করে।

জনসমাবেশ রোধ করতে দক্ষিণ কোরিয়ার সবগুলো চার্চ বন্ধ রাখার আদেশ দেওয়া হয়। যদিও বৃহস্পতিবার চার্চগুলো খুলে দেয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। স্কুলগুলোতে ছাত্রদের এতটা দূরত্বে বসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে হাঁচি-কাশি দিলেও একজনের কাছে আরেকজনের নাক থেকে বের হওয়া বাতাস আসতে না পারে।

দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় দুজনে এক সঙ্গে বসে খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ কোরীয়রা ভোট দিয়েছেন লাইন ধরে এবং একে অন্যের থেকে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে।

সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে সচেতন মনোভাব ও পারস্পরিক দায়বোধ থেকে দেশটিতে করোনার বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকে, আড়াই মাস পরে তার সুফল আসা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথম করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুবিহীন দিন কাটাল তারা।

তবে সাবধানতায় চিড় ধরেনি দেশটির কর্তৃপক্ষের। দ্য কোরিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ বলেছে, যতদিন পর্যন্ত এর ভ্যাকসিন বের না হয়, ততদিন সতর্কতায় ঢিল দেওয়ার অবকাশ নেই।