স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। পার্ক, রেস্টুরেন্ট, শপিং মলে ভিড় করতে শুরু করেছে মানুষ। দেশজুড়ে করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় সামাজিক দূরত্ব কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। ফলে লোকজন আবার স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ফিরতে শুরু করেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই অনেক প্রতিষ্ঠান বাড়ি থেকে কাজ করার নিয়ম বাতিল করে দিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান পুণরায় কর্মীদের অফিসে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে লোকজন বাড়িতে কাজ না করে এখন অফিসে গিয়েই কাজ করছে।
তবে অনেক প্রতিষ্ঠানই কাজের সময় কমিয়ে এনেছে এবং মুখোমুখি বসে কোনো বৈঠক করছে না। ছুটির দিনগুলোতে লোকজনকে পার্ক, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল ও বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে দেখা গেছে। সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই সেখানে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।
সে সময় চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। তবে গত কয়েক সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। সেখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমেছে। ৩১ বছর বয়সী কিম তায় হিয়োং বলেন, আমি কমিউনিটি ফুটবল ক্লাবের একজন সদস্য। আমরা গত শনিবার দু’মাসের মধ্যে প্রথমবার খেলতে গিয়েছি।
তিনি সিওলে বাস করেন। এই খেলোয়ার বলেন, আমরা খেলার সময় মুখে মাস্ক পরে ছিলাম। যদিও করোনাভাইরাস নিয়ে এখনও আতঙ্ক আছে। তবে আবহাওয়া ছিল চমৎকার এবং আমাদের খুব ভালো লেগেছে। দক্ষিণ কোরিয়া গত রোববার আরও ১৬ দিনের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং খেলা-ধুলার ক্ষেত্রে এই নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
দেশটিতে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। গত কয়েকদিনে প্রতিদিন নতুন করে ২০ জন বা তার কম মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অধিকাংশই বহিরাগত। আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকায় এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটি কড়াকড়ি শিথিল করতে শুরু করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেন্টার ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন (কেসিডিসি) জানিয়েছে, দেশটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩। অপরদিকে, নতুন করে মারা গেছে দু’জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৪। অপরদিকে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২৩৬ জন। ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৮ হাজার ১১৪ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছে।
করোনার মধ্যেও দেশটিতে গত সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সবকিছু আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলেও স্কুলগুলো এখনও খুলে দেওয়া হয়নি। এখনও অনলাইনেই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।