Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

mosjidআর কিছুদিন পরেই শুরু হবে রমজান। বিশ্বের মসুল্লিদের কাছে রমজান মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসে মুসল্লিরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের খাবার ও পানাহার থেকে বিরত থাকেন। প্রতিবছর রমজান মাসকে কেন্দ্র করে মুসল্লিদের মধ্যে এক উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে এমন চিত্র খুব একটা চোখে পড়বে না।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। চীন থেকে এই ভাইরাস এখন বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই।

chardike-ad

মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সে কারণে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, বার বার হাত পরিষ্কার করা এবং অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সে কারণে ইতোমধ্যেই অনেক দেশে মসজিদে নামাজ আদায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আজান দেওয়া হলেও মুসল্লিরা এখন আর দলে দলে মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারছেন না।

mosjid-innerসম্প্রতি সৌদির কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার্সের শীর্ষ ধর্মীয় নেতারা রমজানে বিশ্বের মুসল্লিদের ঘরে বসেই নামাজ আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছেন, মুসল্লিদের জনসমাগম এড়িয়ে চলবে হবে। কারণ এটাই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সবার এটা মনে রাখা উচিত যে, মানুষের জীবন হেফাজতে রাখা একটি মহৎ কাজ। এর মাধ্যমে স্রষ্টার সান্নিধ্য অর্জন করা সম্ভব।

রমজান মাস মুসল্লিদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একত্রিত হওয়ার মাস। এই মাসে মুসল্লিরা এক সঙ্গে ইফতার করে নামাজ আদায় করে এবং দরিদ্রদের বেশি বেশি দান করে থাকে। কিন্তু করোনার হানায় বিশ্বব্যাপী মসজিদগুলো বন্ধ, চলছে কারফিউ, একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়ের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। ফলে এবারের রমজানে ঘরে বসেই নামাজ আদায় করতে হবে এবং লোকজন শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ইফতার করতে পারবে। এর আগে রমজানে এমন পরিস্থিতি আগে কখনওই দেখেনি বিশ্বের মুসল্লিরা।

আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে থাকেন ইয়ামিন হার্মাচে (৬৭)। প্রতি বছর রমজানের সময় তার বাড়িতে বন্ধু-বান্ধব এবং প্রতিবেশীরা একত্রিত হয়। এক সঙ্গে সবাই ইফতার করে, চা পান করে। কিন্তু এ বছরের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বেশ উদ্বিগ্ন।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা তাদের বাড়িতে যেতে পারব না। আর তারাও আমাদের এখানে আসবে না। করোনাভাইরাস সবার মধ্যেই এক ধরনের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। এমনকি বাড়িতে অতিথি এলেও এখন মানুষ ভয় পাচ্ছে।

সেখানে সব মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লোকজন বাড়িতেই নামাজ আদায় করছেন। ইয়ামিনের স্বামী বলেন, তারাবীহ নামাজ ছাড়া রমজান আমি চিন্তাই করতে পারি না।

লোকজন ভয়ে-আতঙ্কে দোকান বা বাজারেও যেতে পারছে না। মিসরের এক বাসিন্দা বলেন, এ বছর রমজান পালনের কোনো আমেজ দেখা যাচ্ছে না।

শুধুমাত্র রমজান নয়, এবার ঈদুল ফিতরের উৎসবও আগের বছরগুলোর মতো হবে না। করোনার পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে ঈদুল ফিতরেও লোকজনকে বাড়িতেই অবস্থান করতে হবে। এমনকি ঈদের নামাজ আদায়, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, নানা ধরনের আয়োজন সবকিছুই ভাটা পড়ে যাবে।