মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯ জন মারা গেছেন। ফলে ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৪ জনের। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩০৬ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ১৪৪ জনে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, এমআইএস পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান খান। এতে নিজের বাসা থেকে সংযুক্ত হয়ে কথা বলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
ডা. ফ্লোরা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ২৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন করে যুক্ত হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১৯টি ল্যাবরেটরিতে মোট দুই হাজার ১৯০টি নমুনার পরীক্ষা হয়। এতে আরও ৩০৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে দুই হাজার ১৪৪। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও নয়জন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৮৪। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও আটজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ জনে।
বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৬ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়। আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৩২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে আরও তিন হাজার ৬৪১ জনকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১৭৪ জনকে। সবমিলিয়ে তিন হাজার ৮১৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। আর এই সময়ে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পান চার হাজার ২৬ জন।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সাড়ে ২২ লাখের বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দেড় লাখ। তবে পৌনে ছয় লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ১৪৪। মারা গেছেন ৮৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৬ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।