এক সপ্তাহের মৃত্যুর ব্যবধানে বাড়লো আরও ৫০ হাজার। ঠিক এক সপ্তাহ আগে লিখেছিলাম, করোনাভাইরাসের কারণে মৃত্যু পার হলো ১ লাখ। গত এক সপ্তাহে মৃত্যুর হার কমেনি। একই থাকলো। ক্ষেত্রে বিশেষে বেড়েছে। অবশেষে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীব্যাপি মৃতের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেলো।
মৃতের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২২ লাখ ছাড়িয়ে গেলো। গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চীনের উহানে প্রথম সনাক্তের পর এখনও পর্যন্ত বিশ্বের ২১০টি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতি এই করোনাভাইরাস।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে প্রতি মুহূর্তের আপডেট জানানো ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারে আজ ( রাত সাড়ে ১০টার দিকেই দেখা গেলো আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় মোট মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০৮ জন।
১১ এপ্রিল করোনায় মৃতের সংখ্যা পার হয় ১ লাখ। ওই সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৫০ হাজার ছুঁই ছুঁই। এরপর জ্যামিতিক হারেই বাড়তে তাকে মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখে এবং আক্রান্ত বেড়ে ২২ লাখ ২৮ হাজার ৭৮৪। আক্রান্তদের মধ্যে অবশ্য ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৭৮১ জন সুস্থও হয়েছেন।
প্রথম দিকে চীন থেকে ইরান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়ায় ছড়ায় এই ভাইরাসটি। মার্চের শুরুর দিকেই ইতালিতে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। এরপর পর্যায়ক্রমে ইউরোপের বাকি দেশগুলো- স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এর উপস্থিতি বাড়তে থাকে আটলান্টিকের ওপারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
এখনও পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বিধ্বস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীর শক্তিধর এই দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ (৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪১ জন)। মৃত্যু ৩৫ হাজার ৫০০জনের। গতকাল একদিনেই যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষের। মৃতের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ৭৪৫ জনের।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পেন। ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮ জন আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ১৯ হাজার ৪৭৮ জনের। ফ্রান্সে মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজার ৯২০ জনের। আক্রান্ত ১ লাখ ৬৫ হাজার ২৭ জন। জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫৬ জন। মৃত্যু ৪ হাজার ১৯৩ জনের।
যুক্তরাজ্যেও মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত রয়েছে। দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৭৬ জন। আক্রান্ত ১ লাখ ৮ হাজার ৬৯২ জন। ইরানে আক্রান্ত ৭৯ হাজার ৪৯৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ ৫৫৮ জনের। বেলজিয়ামে মৃত্যু ৫ হাজার ১৬৩ জনের। নেদারল্যান্ডসে মৃত্যু ঘটেছে ৩৪৫৯ জনের।
করোনার উৎপত্তিস্থল চীন বলেছিল, তারা ভাইরাসটির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। কিন্তু দেখা গেলো দেশটিতে আবারো করোনা ওয়েব সৃষ্টি হচ্ছে আজই তারা সেখানে নতুন করে ১২৯০ জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। সব মিলিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ হাজার ৬৩২ জনে। মোট আক্রান্ত ৮২ হাজার ৬৯২ জন।
মৃতের সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তুরস্ক, ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড এবং সুইডেনে। তুরস্কে মোট মৃতের সংখ্যা ১৭৫৯ জন। ব্রাজিলে করোনায় প্রাণ হারালেন ১৯৫৬ জন। কানাডায় ১২৫২, সুইজারল্যান্ডে ১৩২৫ এবং সুইডেনে এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছে ১৪০০ ব্যক্তি।
এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়া ২২ লাখ ২৮ হাজার ৭৮৪ জনের মধ্যে মৃত্যু এবং সুস্থ হওয়াজনিত কারণে ভাইরাস থেক মুক্তি মিলেছে মোট ৭ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৫ জনের। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে, কিংবা হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১৫ লাখ ১৪ হাজার ১০৯ ব্যক্তি। এদের মধ্যে ৪ ভাগ তথা ৫৬ হাজার ৩৬৩ জন রয়েছে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। বাকি ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪৬ জন এখনও ঝুঁকিমুক্ত।