যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে বুধবার আরও পাঁচজন প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেছে। তারা হলেন- আমেনা বেগম, শাহানা, আবদুস সামাদ, হারুনর রশিদ, কাজী আবু রাশেদ ও আলী আরশদ। এ নিয়ে দেশটিতে ৯৫ বাংলাদেশির করোনায় মৃত্যু হলো।
কৃষি কর্মকর্তা শাহানার মৃত্যুতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং মাগফেরাত কামনা করা হয়। সেই সাথে মরহুমার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও সরকারিভাবে এই তথ্য প্রকাশ হয়নি। কমিউনিটি যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের মৃত্যুর সংখ্যা পাওয়া গেছে। করোনায় চারজন ট্যাক্সিচালকসহ ১১ ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া আরও ১৬ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১ ভারতীয়র মধ্যে ১০ জনই পুরুষ। বাকি একজন নারী। এ ছাড়া যারা মারা গেছে, তাদের মধ্যে ১০ জন নিউইয়র্ক এবং নিউ জার্সির। তাদের মধ্যে চারজন নিউইয়র্ক শহরের ট্যাক্সিচালক। একজন ফ্লোরিডার নাগরিক।
লকডাউন জারির আগে নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরে সবাই যখন আতঙ্কিত, তখনো প্রবাসীরা কোনো ধরনের সচেতনতা, প্রচার বা প্রস্তুতিতে যোগ দেননি। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি সংগঠন আছে কয়েক’শ। সংগঠনগুলোর অনেকে করোনার প্রাদুর্ভাবের সময়ও একসঙ্গে নির্বাচনী প্রচার থেকে শুরু করে চায়ের আড্ডায়, রেস্তোরাঁয় বসে সভা-সমাবেশ করেছেন। ফলে এখন অনেকেই ভুলের মাশুল দিচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
লকডাউন শুরুর পর নিউইয়র্কে প্রধান প্রধান বাংলাদেশি মসজিদগুলো কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও বেশ কিছু এলাকায় জামাতে নামাজ হয়েছে। তাবলিগসহ অন্যান্য ধর্মীয় সমাবেশ হয়েছে। এসব থেকে বাংলাদেশিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। আক্রান্ত লোকজনের মাধ্যমে নানাভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় স্বদেশিদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে।
বুধবার রাত পর্যন্ত নিউইয়র্ক নগরীতে মোট মৃত্যু ৪ হাজার ২৬০ রেকর্ড করা হয়েছে। মৃতের এ সংখ্যাটি প্রকৃত সংখ্যা নয় বলে মেয়র ডি ব্লাজিও নিজেই বলেছেন। নগরীর ফায়ার সার্ভিস বলেছে, তারা যেখানে দিনে ২০ থেকে ২৫টি মৃত্যুর রেকর্ড করেছে স্বাভাবিক সময়ে, সেখানে করোনা–তাণ্ডবের সময়ে তাদের কাছে প্রতিদিন গড়ে ২০০ লোকের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় সোয়া ১৫ লাখ। মারা গেছেন সাড়ে ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ। তবে তিন লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ