জরুরি পণ্য শিপমেন্ট এবং মাস্ক ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ (পিপিই) করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির কাজে নিয়োজিত ৪১টি পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান ছুটির সময়ে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সারা দেশে ৪১টি পোশাক কারখানা আজকে চালু আছে। এ সব কারখানার অনেকের জরুরি রফতানি ক্রয়াদেশ রয়েছে। এছাড়া বেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মাস্ক, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সহ করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করছে।
এর মধ্যে সাভারের আশুলিয়া এলাকায় ছয়টি, চট্টগ্রামে ১০টি, গাজীপুরে ২১টি, ঢাকা মেট্টপলিটন এলাকায় ৪টি গার্মেন্টস খোলা রয়েছে। তবে করোনায় সম্পূর্ণ লকডাউন হওয়ায় আজকে নারায়ণগঞ্জে কোনো পোশাক কারখানা খোলা নেই।
এর আগে, গত ৬ এপ্রিল পোশাক মালিকদের বড় দুটি সংগঠন- বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব পোশাক কারখানা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
যৌথ বিবৃতিতে শর্ত দিয়ে কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে বলা হয়, রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান যাদের জরুরি রফতানি ক্রয়াদেশ রয়েছে এবং যেসব কারখানায় করোনার সরঞ্জামাদি, মাস্ক, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) এবং করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করছে, এমন কারখানাগুলোকে তাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে প্রয়োজনে খোলা রাখতে পারবে। এ ক্ষেত্রে স্ব-স্ব অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ/বিকেএমইএ), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর এবং শিল্প পুলিশকে খোলা রাখার বিষয়টি জানাতে হবে।
এদিকে, গার্মেন্টস খোলা রাখলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নেয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের এ সময়ে বিশেষ প্রয়োজনে কোনো কারখানা খোলা রাখতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা যেন চার ফুট দূরে দূরে বসে কাজ করতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। আর যাদের সর্দি-কাশি আছে তারা যেন কাজে যোগ না দেয়। তারা যেন বিশ্রামে থাকে।’
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ প্রথম দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ক্রমেই বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত ২১৮ জন আক্রান্ত হয়েছে আর মারা গেছে ২০ জন। দেশে করোনার বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত তিন দফায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে জরুরি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য সবকিছু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে মানা করা হয়েছে। ফলে দেশে কার্যত লকডাউনই চলছে বলা যায়।