করোনার প্রাদুর্ভাবরোধে জনসমাগম এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মসজিদে মাইকিং করে ঘরে নামাজ আদায়ের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। রাজধানীর পুরান ঢাকা, যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, বাড্ডা, তেজগাঁও, বংশাল, রমনা এলাকার বিভিন্ন মসজিদ থেকে একই ধরনের নির্দেশনা দিয়ে মাইকিং করা হয়।
সোমবার (৬ এপ্রিল) আসর নামাজের পর রাজধানীর পুরান ঢাকার চাঁদ মসজিদের মাইকে ঘোষণা করা হয়, ‘প্রিয় এলাকাবাসী, আগামী কয়েকদিন আপনারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঘরে আদায় করুন। মসজিদে নিয়মিত জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে আপনারা বাসায় আদায় করুন।’
বিকেলে যাত্রাবাড়ীর উত্তর রায়েরবাগের বাইতুর রহমত জামে মসজিদ ও মাতুয়াইলের চান বানু জামে মসজিদ থেকে ঘোষণা করা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে মসজিদে জনসমাগম এড়াতে আপনারা সবাই বাসায় নামাজ আদায় করে নেবেন।
ফার্মগেটের পশ্চিম তেজতুরী বাজার মসজিদ ও বাড্ডা এলাকার মসজিদে ‘দয়া করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাসায় আদায় করার অনুরোধ’ জানানো হয়। বংশালের পেয়ালাওয়ালা জামে মসজিদে আসর নামাজে দেয়া এক ঘোষণায়, মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে নামাজ ঘরে আদায়ের অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এ-সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ‘ইতিমধ্যে মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে পবিত্র মক্কা মুকাররমা ও মদিনা মুনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন।’
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে তারা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ‘মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক পাঁচজন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে এর বাইরে মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।’
এছাড়াও শুক্রবার জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দেশের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৫ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৩ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াল ১২ জনে।