Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

dubai-hotelঘোরার কথা বলে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে আসেন এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী (৩৬)। পরে তাকে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তি তাকে দুবাইয়ের একটি নাইটক্লাবে নিয়ে মদপান করিয়ে ধর্ষণও করেন।

মানবপাচার ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারের পর ওই ব্যবসায়ীকে দুবাইয়ের আদালতে তোলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি এক নারীর সহযোগিতায় ওই কিশোরীকে চাকরি দেয়ার নামে নানা সুবিধা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

chardike-ad

ভুক্তভোগী কিশোরী আবুধাবি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর অভিযুক্ত দুজন তাকে দুবাইয়ে তাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। সেখানে তাকে নিয়মিত মারধর ও ভয়ভীতি দেখাতেন তারা। পরে মেয়েটিকে একটি ম্যাসেজ পার্লারে কাজ করতে বাধ্য করেন। সেই সঙ্গে ম্যাসেজের পর কাস্টমারদের সঙ্গে অবৈধ কাজ করতেও বাধ্য করতেন তারা।

কীভাবে সে আবুধাবি বিমানবন্দরে আসলো এবং ওই বাংলাদেশি ব্যবসায়ী তাকে কীভাবে সেখান থেকে নিয়ে গেলেন, সেসব ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে ভুক্তভোগী কিশোরী।

সে বলে, ‘পাঁচ মাস আমি আমার চাচির সঙ্গে ছিলাম। এ সময় তিনি আমাকে একজন চীনা নারীর সঙ্গে ম্যাসেজ পার্লারে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সেখানে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে পুরুষদের সঙ্গে যৌন মিলন করতে পারব কি-না-তা জানতে চান। আমি তার সেই প্রস্তাবে রাজি ছিলাম না।’

এরপর কীভাবে তার চাচির মাধ্যমে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচিত হলো তা জানিয়েছে ভুক্তভোগী। তিনি বলেন, ‘একটি নতুন মোবাইল ফোন কিনে দেয়ার পর আমাকে নাইটক্লাবে নিয়ে যান ওই ব্যক্তি। এরপর তিনি আমাকে মদপানের প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে মদ খাওয়ার পর আমার ঘুম ঘুম লাগছিল। পরে ঘুম ভেঙে দেখি আমি বিছানায়, সারা শরীর রক্তে ভেজা। এরপর তিনি আমাকে ওই ম্যাসেজ পার্লারে নিয়ে যান। কিন্তু আমি সেখানে কাজ করিনি।’

এরই মধ্যে ভুক্তভোগী কিশোরীর চাচিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিছু টাকা জমিয়ে যাতে চাচিকে ছাড়িয়ে আনতে পারে, সেজন্য মেয়েটি বাধ্য হয়ে পরে ওই ম্যাসেজ পার্লারে কাজ শুরু করে। সেখানে টাকার বিনিময়ে পুরুষদের সঙ্গে যৌন মিলনও করে সে। কিন্তু টাকাগুলো সব সময় ওই ব্যক্তি নিয়ে নিতেন। অনেক মিনতির পর তার ছোটবোনের চিকিৎসার জন্য ২০০ দিরহাম করে দিতেন।

ভুক্তভোগী কিশোরী জানায়, ‘ওই ব্যক্তি আমাকে মারধর করতেন। একবার একজন পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে রাজি না হওয়ায় ফোন ভেঙে দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে খাবার, পানি, টাকা-পয়সা কিছুই দিতেন না। সব সময় হুমকিধামকিও ওপর রাখতেন। তার এক বন্ধু আমাকে একবার ছুরি দিয়ে কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন।’

এভাবেই চলছিল মেয়েটির জীবন। কিন্তু একটা সময় ওই ম্যাসেজ পার্লারেরই এক নারী যেন তার জীবনের রক্ষাকর্তা হয়ে আসেন। তিনি ভুক্তভোগী কিশোরীকে পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য পাঠাতে একটি গাড়িতে তুলে দেন। এরপর সোজা দুবাইয়ের আল কাশিস পুলিশ স্টেশনে চলে আসে মেয়েটি।

সেখানকার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মেয়েটির সঙ্গে যা যা ঘটেছে আমরা সব শুনেছি। ফরেনসিক প্রতিবেদনে তার বয়স ১৫ উল্লেখ করা হয়েছে। তাকে দুবাইয়ের ফাউন্ডেশন ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেনে পাঠানো হয়েছে।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব অভিযোগ স্বীকার করেছেন তিনি। তার মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনে থাকা হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনে এসব ঘটনায় তার যুক্ততার প্রমাণ মিলেছে।