ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে একটা সময় কাটাচ্ছেন হয়তো বিরাট কোহলি। একেতো ব্যাটে রানের খরা। তার ওপর ওয়ানডে সিরিজের পর ধবলধোলাই হতে হলো টেস্ট সিরিজেও। এ কারণে চলতি নিউজিল্যান্ড সফর যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইবে ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা। আরও বেশি বোধহয় ভুলতে চাইবেন কোহলি নিজে স্বয়ং।
কারণ, টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে নিজের মেজাজটা ঠিক রাখতে পারলেন না। রেগেমেগে আগুন হয়ে গেলেন। খুব কড়া ভাষায় কথা বললেন। যা নিয়ে এখন চলছে রীতিমত সমালোচনার ঝড়।
গত মৌসুমে ‘আইসিসি স্পিরিট অফ দ্য ক্রিকেট’ অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন কোহলি। স্টিভেন স্মিথকে বিদ্রুপ জানানো সমর্থকদের চুপ করিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন বিরাট। কিন্তু সেই বিরাটই যখন রোববার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে কেন উইলিয়ামসনের আউটের পর দর্শকদের উদ্দেশে তার মুখের ভঙ্গি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। যাতে দেখা গেছে ঠোঁটে আঙুল ঠেকিয়ে গ্যালারিকে চুপ করতে বলছেন তিনি। অন্য় ভঙ্গিও করেছেন। যার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে তার দেওয়া সেন্ড-অফ নিয়েও চলছে জোর আলোচনা।
এ কারণে সোমবার ম্যাচ শেষে স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয় এক সাংবাদিক কোহলির এই সেলিব্রেশন নিয়ে প্রশ্ন করে বসলেন বিরাটকে। তিনি বলেন, ‘বিরাট, আউট হওয়ার পর কেন উইলিয়ামসনের প্রতি আচরণ নিয়ে কী বলবেন? ভারতের অধিনায়ক হিসেবে আপনার কি আরও ভাল উদাহরণ স্থাপন করা উচিত নয়?’
জবাবে কোহালি পাল্টা প্রশ্ন করলেন, ‘আপনার কী মনে হয়?’
সেই সাংবাদিক বলে ওঠেন, ‘আমি তো আপনাকে প্রশ্ন করেছি।’
বিরাট ফের বলেন, ‘আমি আপনাকে এর উত্তর দিতে বলছি।’
সাংবাদিক তখন বলেন, ‘আরও ভাল উদাহরণ রাখা উচিত আপনার।’
কোহালি তখন বলেন, ‘আপনাকে বের করতে হবে ঠিক কী ঘটেছিল। আরও ভাল প্রশ্ন নিয়ে আসা উচিত ছিল আপনার। আপনি যা ঘটেছিল তার অর্ধেক প্রশ্ন বা অর্ধেক খবর নিয়ে এখানে আসতে পারেন না। আর আপনি যদি বিতর্ক তৈরি করতে চান, তবে এটা তার উপযুক্ত জায়গা নয়। আমি এটা নিয়ে ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলেছি। যা ঘটেছে, তা নিয়ে তার কোনও সমস্যা নেই। ধন্যবাদ।’
পুরো ঘটনায় কোহলির হতাশা, মানসিক অস্বস্তি ছিল স্পষ্ট। প্রসঙ্গতঃ সাংবাদিক সম্মেলনে উইলিয়ামসনের কাছেও এমন প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। তবে বিরাটের সেলিব্রেশন নিয়ে বলতে গিয়ে প্রথমেই একগাল হেসে নেন কিউই অধিনায়ক। এরপর জানান, ‘এই সেলিব্রেশন বিরাটের ক্রিকেটের প্রতি প্যাশন। বেশি গভীরে না যাওয়াই ভালো।’
এর আগেও সংবাদিক সম্মেলনে কোহালি মেজাজ হারিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ হেরে যাওয়ার পরও এক সাংবাদিকের উদ্দেশে এমনই মন্তব্য করেছিলেন তিনি।