Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

remittanceনগদ প্রণোদনা প্রদান ও টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে বৈধপথে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ৪১ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসাবে গত ফেব্রুয়ারির চেয়ে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৪৫ কোটি ২০ লাখ ডলার সমমূল্যের অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত বছরের ফেব্রুয়ারি চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।

chardike-ad

ব্যাংকার ও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে মূলত দুটি কারণে। একটি হলো সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া শুরু করেছে। অন্যটি হচ্ছে ডলারের দাম বেড়েছে। অর্থাৎ এখন ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা দেশে বৈধপথে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত হচ্ছেন। এ ধারা অব্যাহত থাকবে এ বছরও বৈধ চ্যানেলে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

২০১৯ সালের শুরুতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণ ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। যর্থাৎ পণ্য আমদানিতে প্রতি ডলারে ব্যয় করতে হয় ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। চলতি বছরের দফায় দফায় দাম বেড়ে এখন ডলার ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সা দাঁড়িয়েছে। এ হিসাবে গত এক বছরে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম এক টাকার বেশি বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। আগস্টে আসে ১৪৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অক্টোবর মাসে আসে ১৬৪ কোটি ডলার। নভেম্বর মাসে এসেছিল ১৫৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার। ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার এবং জানুয়ারিতে আসে ১৬৩ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার।

এদিকে রেমিট্যান্সের প্রণোদনার অর্থ যেন সহজে প্রবাসীরা পঠাতে পারে এজন্য বেশ কিছু শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী দেড় লাখ টাকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনোপ্রকার কাগজপত্র লাগবে না।

আগে ১৫০০ মার্কিন ডলার বা সমমূল্যের অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে বিনাপ্রশ্নে প্রণোদনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্ত প্রবাসীদের বোঝার সুবিধার্ধে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি দেড় লাখ টাকার উপরে রেমিট্যান্সের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে দেড় লাখ টাকা বা দেড় হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্সে প্রেরণকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। আগে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রেমিট্যান্স কাগজপত্রাদি দাখিলের সময়সীমা ছিল। এটি বাড়িয়ে ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে।

জানা গেছে, দেড় লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্সের নগদ প্রণোদনা পাওয়ার জন্য রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংকের শাখায় পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতার দেওয়া নিয়োগপত্রের কপি জমা দিতে হয়। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ব্যবসায় নিয়োজিত হলে ব্যবসার লাইসেন্সের দিতে হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। যা অর্থবছর হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।

তারও আগে বিগত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। সে সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল প্রবাসীরা। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।