ওয়ানডেতে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা। এখন পযর্ন্ত এটিই বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের জয়। এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জয় ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ১৬৩ রানের জয় পেয়েছিল টাইগাররা। বাংলাদেশের দেওয়া ৩২১ রানের জবাবে লঙ্কানরা গুটিয়ে গিয়েছিল ১৫৭ রানে। এবার মাশরাফি বিন মর্তুজাদের দেওয়া ৩২২ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ১৫২ রানে।
রোববার (০১ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে লিটন দাশের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে টাইগার বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে জিম্বাবুয়ে। চামু চিভাবার দল ৩৯.১ ওভারে করে মাত্র ১৫২ রান।
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর প্রথমবার মাঠে নামেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আর ৮ মাস পর দলে ফিরেই শুরুতে বাংলাদেশকে উইকেট উদযাপনে ভাসান ২৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ঝড়ো ২৮ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই জিম্বাবুয়ের ওপেনার টিনাশে কামুনহুকামউইকে (১) বোল্ড করেন সাইফ। এরপর এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেলে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাবাকে (১১)। শেষদিকে আরেকটি উইকেট শিকার করেন তিনি। বোল্ড করেন কার্ল মাম্বাকে (১৩)।
এছাড়া নিজের শেষ সিরিজ স্মরণীয় করতে যেন মাঠে নেমেছেন মাশরাফিও। নিজের দুই উইকেটের প্রথমটিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক চামু চিভাবাকে (১০) ফেরান টাইগার অধিনায়ক। এরপর প্রতিপক্ষের শেষ উইকেট টিনোটেন্ডা মুতোম্বোদজিকে (২৪) আউট করে আন্তর্জাতিক ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট মিলিয়ে ৭০০ উইকেটের মালিক হোন মাশরাফি। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমন ও তাইজুল ইসলাম।
এর আগে দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন লিটন দাশ। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কা সফরে খেলা হয়নি এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের। এদিন দলীয় ৩৪তম ওভারে ডোনাল্ড ট্রিপানোর প্রথম বলে চার হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ৯৫ বলে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক তুলে নেন লিটন।
তবে একই ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ১৯ রানে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। এরপর চোটে পড়ে অপরাজিত থেকে সাজঘরে ফেরেন লিটন। তার আগে ১০৫ বলে ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১২৬ রান করেন তিনি। এর আগে লিটন তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলেছিলন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। দুবাইতে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন ১২১ রান।
লিটনের ওঠে যাওয়ার পর বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোহাম্মদ মিঠুন। মাহমুদউল্লাহ ক্রিস এমপোফুর বলে ব্যক্তিগত ৩২ রানে ফিরলেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন মিঠুন। তবে এরপর বেশিক্ষণ টিকেননি তিনিও। ব্যক্তিগত ৫০ রানে এমপোফুর দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি।
তবে শেষদিকে ঝড় তুলেন সাইফউদ্দীন। ১৫ বলে ৩ ছক্কায় ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ১ ছক্কায় ৭ রানে আউট হোন মিরাজ। ব্যাট হাতে মাঠে নামলেও কোনো বলের মুখোমুখি হননি মাশরাফি।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে লিটনের সঙ্গে অর্ধশতক করার পর বিদায় নেন তামিম ইকবাল। ১৩তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ৬১ রানের মাথায় ওয়েসলি মাধেভেরের বলে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন এই ওপেনার। পরে নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৮ বলে ২৯ করে টিনোটেন্ডার ২৬তম ওভারে আউট হন।