প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ইতালির। দেশটিতে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) একদিনেই দেশটিতে ৩০৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ইতালিতে মোট করোনা আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১২৮ জনে। আর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইতালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৮ থেকে বেড়ে ২৯ জনে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত দেশটিতে এতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৮৮। তবে যাদের পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৫২ শতাংশের লক্ষণ কম দেখা গেছে ইতালির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
দেশটির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান অ্যাঞ্জেলো বোরেলি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, করোনা আক্রান্ত ৫২ শতাংশ রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছে। আরও ১০১ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছে এবং ৪০১ জন লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপের মধ্যে ইতালিতেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে মারাত্মক। ইতালির পরিস্থিতি দেখে প্রতিবেশী সব দেশ ইতোমধ্যে সীমান্ত বন্ধ করেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। এরপর থেকে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে এ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
চীনে এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২ হাজার ৮৩৫ জন, শনাক্ত হয়েছেন ৭৯ হাজার ২৫১ জন। চীনের বাইরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৪ হাজার ৪০০ জন। অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া বিশ্বের সব মহাদেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াতে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৫০ জন এবং মারা গেছেন ১৬ জন। আর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২৯৯২ জনের। আর করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ৮৫ হাজারেরও বেশি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টিকারী প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে দেশটির ভেতরে এটিই প্রথম কোনো মৃত্যু বলে মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে সিএনএন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই ভাইরাসের বিস্তারে বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে মহামারির শঙ্কা প্রকাশ করেছে।