লেবানন থেকে দেশে ফেরার পথে মালেকা বেগম নামে এক বাংলাদেশি নারীকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সারজাহ হয়ে দেশে ফেরার পথে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।
মালেকা বেগম মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের হবিজ উদ্দিন ফকিরের মেয়ে। লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বৈরুতের রফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে মালেকা বেগমসহ ৫০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মী দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারা সবাই ছিলেন দূতাবাসের স্বেচ্ছায় দেশে ফেরা কর্মসূচীর আওতায় নিবন্ধিত কাগজপত্রবিহীন অবৈধ প্রবাসী।
তিনি আরও জানান, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু উড্ডয়নের প্রায় ২ ঘণ্টা পরেই মিশরের আকাশসীমায় মালেকা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এ সময় পাইলট ফ্লাইটটিকে মিশরের রাজধানী কায়রোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন। সেখানে মালেকা বেগমের মরদেহ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে বাকি যাত্রী নিয়ে শারজাহ বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ফ্লাইটটি।
কায়রোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে বৈরুত দূতাবাস জানিয়েছে। শ্রম সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কায়রোর বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি খুব শিগগিরই লেবানন প্রবাসী এই রেমিট্যান্সযোদ্ধার মরদেহ দেশে পৌঁছে যাবে।
জানা গেছে, লেবাননে দীর্ঘদিন কাগজবিহীন ছিলেন মালেকা বেগম। তাই দেশে যেতে পারছিলেন না। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বৈরুত দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচীর আওতায় দেশে যাবার জন্য বৈরুত দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেন। তার সিরিয়াল ছিল ৬৫১। প্রায় ৫ মাস অপেক্ষায় থাকার পর লেবাননের জেনারেল সিকিউরিটি থেকে অন্যদের সঙ্গে মালেকা বেগমের জন্য দেশে যাওয়ার ছাড়পত্র আনে বৈরুত দূতাবাস।
মালেকা বেগমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভিসাবিহীন থাকার কারণে মালেকা বেগম দীর্ঘ দিন দেশে আসতে পারেননি। তাই এবার দেশে ফেরার খবরে স্বামী সন্তানসহ পুরো পরিবার অপেক্ষায় ছিলেন প্রিয়জনের। বাড়িতে নেয়ার জন্য গাড়িও নিয়ে বিমানবন্দরে গিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা।