ভাগ্য বদলের আশায় মাত্র দুই বছর আগে লেবাননে পাড়ি জমান দুলাল মিয়া (৪০)। দেশটিতে তিনি সাইনবোর্ড তৈরির কাজ করতেন। প্রথম বছর বৈধ থাকলেও পরবর্তীতে অবৈধ হয়ে যান। থাকতেন ডিকুয়ানী এলাকার একটি মেসে।
বিদেশের মাটিতে কাগজহীন প্রবাসীর ফেরারী জীবন আর সহ্য হচ্ছিল না। তার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়া দেশটিতে আয় রোজগারও তেমন ছিল না। কয়েকমাস যাবত বেকার থাকার পর শেষ পর্যন্ত স্বদেশ ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
সে লক্ষ্যে দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচির দ্বিতীয় ধাপে অনলাইনে নাম নিবন্ধনের সুযোগটাও ভাগ্য জুটেছিল। বাকি ছিল শুধু আবেদন প্রক্রিয়া। সেই অপেক্ষা নতুন কাজ ভাগ্যে জুটে যায়, কিন্তু এই ভাগ্যই কেড়ে নিল তার অমূল্য জীবনটাই। আর ফিরবেন না দেশে। ‘অবৈধ’ যন্ত্রণা নিয়েই না ফেরার দেশে চলে যেতে হলো এই বাংলাদেশি রেমিট্যান্সেযোদ্ধাকে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দিনেই দায়িত্ব দেওয়া হয় জুনি জেলায় নির্মাণাধীন ৭তলা একটি ভবনের কাজে। এ দিনেই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। ভবনের ছাদে কাজ শেষে নিচে নামার সময় অসাবধানতা বশতঃ লিফটের জন্য তৈরি করা ফাঁকা জায়গায় পড়ে যান।
সহকর্মীরা তাকে দেশটির জুনির নটরডেম ডিউ লিবান হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা জানায়, দুর্ঘটনায় মাথায় প্রচণ্ড আঘাত আর পিঠের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে এবং অবস্থা আশংকাজনক দুলালের।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় চিকিৎসকদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে মারা যান দুলাল মিয়া। মরদেহ এখন ওই হাসপাতালে মর্গে রয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।