পাঁচ সপ্তাহে স্পেনে পাঁচজন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। জানুয়ারির শুরু থেকে ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখ পর্যন্ত স্পেনের বিভিন্ন স্থানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তারা মৃত্যুবরণ করেন। এদের মধ্যে তিনজন জানুয়ারিতে এবং দুইজনের ফেব্রুয়ারির শুরুতে মৃত্যু হয়।
৫ জানুয়ারি চাঁদপুরের ইমদাদুল হক পাঠান (৫৫) স্পেনের বার্সেলোনায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এর তিনদিন পর ৮ জানুয়ারি বার্সেলোনা প্রবাসী সিলেটের মৌলভীবাজারের আরব আলী (৫৭) ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ফ্রান্সের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। একই মাসের ২৬ জানুয়ারি শরিয়তপুরের সিরাজুল ইসলাম (৫৪) কাতালোনিয়ার সান্তাকলমায় বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগে মৃত্যুবরণ করেন।
ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুবরণ করে আরও দুই স্পেন প্রবাসী বাংলাদেশি। এর মধ্যে ৩ ফেব্রুয়ারি শরিয়তপুরের কাজী আরজু (৫৮) স্পেনের গ্রান কানারিয়ার টেনেরিফে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এর এক সপ্তাহ পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মো. জসীম পাটোয়ারি (৫১) স্পেনের করডোবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এদের মধ্যে জানুয়ারি মাসে মৃত্যুবরণকারী ইমদাদুল হক পাঠান, আরব আলী ও সিরাজুল ইসলামের মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুবরণকারী কাজী আরজুর মৃতদেহ টেনেরিফে লাশঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। তার মরদেহ আগামী শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করা জসীম পাটোয়ারির মরদেহ সান্তাকলমায় একটি লাশঘরে সংরক্ষিত আছে। তবে কবে নাগাদ তার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে তা জানা যায়নি। বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে তার লাশ দেশে পাঠানোর তহবিল গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এদিকে পাঁচ সপ্তাহে পাঁচটি মৃত্যু সংবাদ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুরো স্পেনে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও শোকাবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
স্পেনে কারো মৃত্যু হলে তার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠাতে বাংলাদেশি পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা খরচ হয়। সাধারণত স্পেনে কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে দেশে স্বজনদের কাছে মরদেহ পৌঁছে দিতে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রবাসীরা স্বেচ্ছাশ্রমে তহবিল সংগ্রহ করেন। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ ও বাণিজ্য শহর বার্সেলোনায় সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশির বসবাস। এই দুই শহর থেকেই এ তহবিল সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসে আবেদন করলে তারা লাশ পরিবহনের ক্ষেত্রে শুধু বিমানভাড়া নির্দিষ্ট ভাউচারের মাধ্যমে মৃতের পরিবারকে প্রদান করে থাকে।