পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে খুব কাছে গিয়েও অন্তত তিনটি ম্যাচে হেরে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। সফরকারী ভারত সেই সিরিজ জিতেছিল পুরো ৫-০ ব্যবধানে। ওয়ানডে সিরিজে সেই একই স্বাধ এবার ভারতকে ফিরিয়ে দিচ্ছে কিউইরা। তিন ম্যাচের সিরিজে এরই মধ্যে এগিয়ে গেছে ২-০ ব্যবধানে, নিশ্চিত করে ফেলেছে সিরিজের শিরোপা জয়।
আজ (শনিবার) অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ২২ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। পেসার নবদ্বীপ সাইনিকে নিয়ে লড়াই করেছিলেন রবিন্দ্র জাদেজা। কিন্তু শেষতক বৃথাই গেছে তার চেষ্টা। নিউজিল্যান্ডের করা ২৭৩ রানের জবাবে ভারত অলআউট হয়েছে ২৫১ রানে। আগামী মঙ্গলবার হবে সিরিজের শেষ ওয়ানডে।
নিউজিল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ২৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই হোঁচট খেতে থাকে ভারত। টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় একশ’র আগেই তারা হারিয়ে ফেলে ৫ উইকেট। শ্রেয়াস আইয়ার ছাড়া আর কেউই রান পাননি। দুই তরুণ ওপেনার পৃথ্বি শ ২৪ ও মায়াঙ্ক আগারওয়াল আউট হন ৩ রান করে।
লক্ষ্য তাড়া করার বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত অধিনায়ক বিরাট কোহলিও সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে করতে পারেন মাত্র ১৫ রান। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লোকেশ রাহুলও সাজঘরে ফেরেন স্টাম্প ছত্রখান হয়ে, তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৪ রান। কেদার যাদভ আউট হন ৯ রান করে।
চার নম্বরে নামা শ্রেয়াস খানিক চেষ্টা করেন সাতে নামা জাদেজাকে নিয়ে। কিন্তু দলীয় ১২৯ রানের মাথায় ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়ে যান তিনিও, খেলেন ৫৭ বলে ৫২ রানের ইনিংস। খানিকবাদে পেস বোলিং অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর ১৫ বলে ১৮ রান করে ফিরে গেলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত।
শেষের ৩ উইকেটে জয়ের জন্য তাদের করতে হতো ১১৩ বলে ১২১ রান। তখনই পেসার সাইনিকে নিয়ে স্রোতে বিপরীতে দাঁড়িয়ে যান জাদেজা। দুজন মিলে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৭৬ রানের জুটি। ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন আপাদমস্তক বোলার সাইনি। কিন্তু তিনি সাজঘরে ফিরে যান লক্ষ্য থেকে ৪৪ রান দূরে থাকতে। পুরোপুরি একা বনে যান জাদেজা।
তখনও জিততে হলে ৩৩ বলে ৪৪ করতে হতো ভারতকে। তা পারেননি জাদেজা। ইনিংসের ৪৯তম ওভারে আউট হয়েছে দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে। তার আগে ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৫ রানের ইনিংস খেলেছেন এ বাঁহাতি অলরাউন্ডার। যা দলের জয়ের জন্য যথেষ্ঠ প্রমাণিত হয়নি। তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ২২ রানের পরাজয় সঙ্গে নিয়েই।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন হ্যামিশ বেনেট, টিম সাউদি, কাইল জেমিসন এবং কলিন দি গ্র্যান্ডহোম।
এর আগে রস টেলরের হার না মানা ৭৩ রানের ইনিংসে ভর করে নিউজিল্যান্ড দাঁড় করায় ৮ উইকেটে ২৭৩ রানের লড়াকু সংগ্রহ। নবম উইকেটে লোয়ার অর্ডারের কাইল জেমিসনকে (২৪ বলে অপরাজিত ২৫) নিয়ে ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন এক জুটি গড়েন টেলর, সেটাও প্রায় ৯ রানরেটে।
নিউজিল্যান্ড অবশ্য শুরু থেকেই এমন বিপদে ছিল না। মার্টিন গাপটিল আর হেনরি নিকোলস উদ্বোধনী জুটিতে দলকে তুলে দিয়েছিলেন ৯৩ রান। ৪১ রান নিকোলস ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ২২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন ওয়ানডাউনে নামা টম ব্লান্ডেল।
তারপরও কিন্তু ২ উইকেটেই ১৫৭ রান তুলে ফেলেছিল কিউইরা। সেখান থেকে হঠাৎ ধস। ৭৯ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৭৯ রান করা গাপটিল রানআউটের কবলে পড়ার পরই খেই হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। ৪০ রানের মধ্যে হারায় ৬টি উইকেট।
তবে হাল ছাড়েননি টেলর। জেমিসনকে নিয়েই খেলে গেছেন শেষ ওভার পর্যন্ত। ৭৪ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৭৩ রানে।
ভারতের পক্ষে ৫৮ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন ইয়ুজবেন্দ্র চাহাল। ৬০ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার শার্দুল ঠাকুরের।