যুক্তরাজ্যের পুর্ব লন্ডনের ইস্টহামে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার দায়ে এক বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ২০০৬ সালে তাদের হত্যার পর মো. আব্দুল শাকুর (৪৬) নামের ওই ব্যক্তি লন্ডন থেকে পালিয়ে যান। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে এ সাজা দেন লন্ডনের দ্য ওল্ড বেইলি আদালত। যুক্তরাজ্যে যাবজ্জীবন সাজার মেয়াদ সর্বনিম্ন ৪০ বছর।
দেশটির আদালত জানায়, ঘাতক মো. আব্দুল শাকুর ১৯৯৯ সাল থেকে পূর্ব লন্ডনের ইস্টহামে স্ত্রী জুলি বেগমকে (২৬) নিয়ে বসবাস করতেন। ২০০৭ সালের জানুয়ারির শুরুতে ওই বাসার বেডরুম থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তান তানহা খাতুন (৬) ও আনিকা খাতুনের (৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
২০০৬ সালে ৩১ডিসেম্বর রাতে তাদের হত্যার পর আব্দুল শাকুর (৪৬) নামের ওই ব্যক্তি পালিয়ে প্রথমে বাংলাদেশে পরে ভারতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। দীর্ঘ তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয় তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৯ সালের এপ্রিলে কমনওয়েলথের মাধ্যমে শাকুরকে যুক্তরাজ্যে ফেরত নেয়া হয়।
মেট্রোপলিটন পুলিশের বিশেষ অপরাধ বিভাগের ডিটেকটিভ সার্জেন্ট আমজাদ শরিফ বলেন, শাকুর কিভাবে এতো নির্মম ও হিংস্রভাবে নিজের স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করলো এটা সত্যিই বিস্ময়কর। ২০০৭ সালের পর থেকে এই পর্যন্ত জুলিদের পরিবারকে অবর্ণনীয় যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। মাঝে মধ্যে মনে হয়েছে, এই হত্যার বিচার কোনোদিন সম্ভব না। বিশেষ করে তার পালিয়ে যাওয়া থেকে আটকের আগ পর্যন্ত এমনটা মনে হয়েছে। অবশেষে সুবিচার নিশ্চিত হওয়ায় আমরা খুশি।
আদালতে দেওয়া এক বিবৃতিতে জুলিদের পরিবার বলেছে, আব্দুল শাকুর আমাদের পরিবারকে একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে। জুলি ও তার দুই সন্তানকে হত্যা করেছে। আমরা এটা কল্পনা করতে পারি না। তাদের এখনো প্রতিনিয়ত আমরা স্মরণ করি। শেষ পর্যন্ত খুনির বিচার হওয়ায় অন্তত কিছুটা শান্তি পেয়েছে আমাদের পরিবার।