জটিলতা কাটিয়ে নতুনভাবে উন্মোচিত হচ্ছে কাতারের শ্রমবাজার। নানা অনিয়মের কারণে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে দেশটির সরকার। ফলে সংকোচিত হয় বাংলাদেশের শ্রমবাজার। পরবর্তীতে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে বাংলাদেশি শ্রমিক নেয়া শুরু করতে যাচ্ছে কাতার।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আগামীকাল সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব সেলিম রেজা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, কাতারে বাংলাদেশিদের হাতে দুই নেপালি নাগরিক খুনের ঘটনার পর দেশটির সরকারের কুনজরে পড়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। এরপর থেকেই মূলত বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভিসা প্রদানের বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করে দেশটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনশক্তি রফতানিকারক বলেন, ওই ঘটনার পর কাতার সরকার সরাসরি শ্রমবাজার বন্ধ, এমন কথা না বললেও আকারে-ইঙ্গিতে তারা বাংলাদেশিদের নামে ভিসা ইস্যু করছে না।
২০২২ সালে দেশটির অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। এজন্য বিদেশি জনশক্তিকে কাজে লাগাতে চায় তারা। বিদেশি কর্মী নিয়োগে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ কোটা বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কাতার।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যই মূলত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রম বাজার। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকেই বেশি আসে। রেমিট্যান্সে দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে কাতারে মোট ৪১ হাজার ৯৯৮ জন কর্মী পাড়ি জমিয়েছেন। তার মধ্যে শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৭৪১ জন শ্রমিক গেছেন। কিন্তু দেশটিতে কর্মীর সংখ্যা কমতে কমতে আগস্ট মাসে কর্মী গেছেন মাত্র ২ হাজার ২২৫ জন। এর মধ্যে নারী শ্রমিক ২ হাজার ৫২৩ জন।
এদিকে, বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বৈঠকে বসছে কারিগরি কমিটি। মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি দল ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এসে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যৌথ বৈঠক হবে।
যেসব কারণে বারবার ঝুলে যাচ্ছিল শ্রমবাজারটি এবার অনেকটা একমত হয়েছে উভয় দেশ। এবারের বৈঠকে কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার চাওয়াকে গুরুত্ব দেয়া হবে। এই বৈঠকেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন মন্ত্রী।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ