রাজধানী কুয়ালালামপুর ও পেনাংয়ে অভিবাসন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৩৩ বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ। বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় জালান আমপাংয়ের একটি বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কাজে নিয়োজিত ছিল বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা।
হঠাৎ ইমিগ্রেশন বিভাগের উপস্থিতিতে হতভম্ব হয়ে পালানোর জায়গা না থাকায় আটকের শিকার হয় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ৫৪ জন। আটক ৫৪ জনের মধ্যে ৯ জন ইন্দোনেশিয়ার নারী।
এ সময় বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বাংলাদেশের ১৮, ইন্দোনেশিয়ার ২০, মিয়ানমারের ৩ এবং ইন্ডিয়ার ১ জনকে আটক করে। এ ছাড়াও মালয়েশিয়ার কলকারখানা খ্যাত পেনাং শহরের একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে আটক করে। আটকদের মধ্যে বাংলাদেশের ১৫, ইয়েমেনের ৩, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের ১ জনকে আটক করে পেনাং অভিবাসন বিভাগ।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ায় অবৈধ প্রবাসীদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ শেষ হওয়ার পর থেকেই অভিযান শুরু করে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। এর আগে বছরের প্রথম চারদিনে অভিযানে বাংলাদেশিসহ ৩১৫ অভিবাসীকে আটক করে।
মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, যেসব অবৈধ কর্মী সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নেননি, তাদের আটক করা হবে। ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রধান খায়রুল দাজাইমি দাউদ জানিয়েছে, গত ১ আগস্ট থেকে সরকারের দেয়া সাধারণ ক্ষমা কর্মসূচির সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন দেশের ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৭১ জন দেশে ফিরে গেছেন।
এর আগে ২৯ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানালেও তা আমলে নেয়নি দেশটির সরকার। পরবর্তীতে ২৭ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তান সেরি মহিউদ্দিন ইয়াছিন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, অবৈধ অভিবাসীদের বিভিন্ন সুযোগ দেয়ার কারণেই অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সরকার আর কোনো সুযোগ দিতে চায় না। এদিকে পাঁচ বছরের মধ্যে পাঁচটি রূপরেখার মাধ্যমে বছরে ৭০ হাজার অবৈধ শ্রমিক বা অভিবাসীকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, পাঁচটি রূপরেখার ভিত্তিতে দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসীবিরোধী অভিযান পরিচালিত হবে। আর সেই অভিযানে যারা গ্রেফতার হবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে সরকার।
অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে মালয়েশিয়া সরকারের নেয়া নতুন পাঁচ কৌশল হচ্ছে-এক, প্রয়োগকৃত অভিযান পদ্ধতি, যা দেশব্যাপী অবৈধদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন। দুই, আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ নীতি, যা নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন এবং অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগের নীতিগুলোর সমন্বয় সম্পর্কিত বাস্তবায়ন। তিন, প্রবেশপথ ও বর্ডার নিয়ন্ত্রণ কৌশল, যা দেশের সীমানা এবং প্রবেশপথগুলোর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ। চার, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত নীতিগুলোর সমন্বয়। পাঁচ, মিডিয়া এবং প্রচার কৌশল, যা অবৈধদের বিষয়ে মিডিয়া কাভারেজ, প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধি।