এলিমিনেটর ম্যাচ। হিসেব সহজ, হারলেই বাদ। জিতলে ফাইনালে উঠতে পার হতে হবে আরও এক বাধা। সেই সুযোগটা আর পেলো না ঢাকা প্লাটুন। মাশরাফি বিন মর্তুজার দলকে এলিমিনেটর থেকেই বিদায় করে দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। মিরপুরে চট্টগ্রাম জিতেছে ১৪ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
লক্ষ্য খুব বড় ছিল না, ১৪৫ রানের। ক্রিস গেইলের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে ছোটখাটো এক ঝড় তুলেন জিয়াউর রহমান। ১২ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ২৫ রান করে মেহেদী হাসানের শিকার হন তিনি।
এরপর ইমরুল কায়েসও অনেকটা সময় সঙ্গ দিয়েছেন গেইলকে। ২২ বলে ১ চার আর ৩ ছক্কায় ৩২ রান করে শাদাব খানের বলে আউট হন ইমরুল। অন্যপ্রান্তে যেন অচেনা এক গেইলকে দেখা যাচ্ছিল। ধীরগতিতে এগিয়ে যেতে থাকেন ক্যারিবীয় ওপেনার।
শেষ পর্যন্ত গেইলের ধীরগতির ইনিংসটি থেমেছে ১৪ সেলাই নিয়ে খেলতে নামা মাশরাফির এক হাতের ক্যাচে। শাদাবকে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ঢাকা অধিনায়কের তালুবন্দী হন ৪৯ বলে ৩৮ রান করা গেইল।
তবে পরের সময়টায় কোনোরকম বোকামি না করে দেখেশুনে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর চ্যাডউইক ওয়ালটন। জয় যখন প্রায় নিশ্চিত, তখন আর দেরি করেননি মাহমুদউল্লাহ। ১৮তম ওভারে শাদাব খানকে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়েই আনন্দে মেতেছেন চট্টগ্রাম দলপতি। ১৪ বলে ৪ ছক্কায় তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৪ রানে। ১০ বলে ১২ রানে সঙ্গে ছিলেন ওয়ালটন।
এর আগে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বড় পুঁজি পাওয়া হয়নি ঢাকা প্লাটুনের। লেগস্পিনার শাদাব খানের ফিফটিতে ভর করে ৮ উইকেটে ১৪৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় মাশরাফি বিন মতুর্জার দল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ধীরে ধীরে পেছাতে থাকে ঢাকা প্লাটুন। ওপেনার তামিম ইকবাল (১০ বলে ৩), তিনে নামা এনামুল হক বিজয় (৪ বলে ০) কিংবা চার নম্বরে আসা লুইস রিস (৩ বলে ০) কেউই পারেননি উইকেটে থিতু হতে। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৮ রান।
তামিম, বিজয়, রিস আউট হলে জুটি বাঁধেন আগের ম্যাচে রেকর্ড গড়া মেহেদী হাসান ও মুমিনুল হক। কিন্তু এ ম্যাচে আর কাজ হয়নি তাদের জুটিতে। নবম ওভারের চতুর্থ বলে ৯ বল খেলে ৭ রান করে ফিরে যান মেহেদী, পরের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জাকের আলি অনিক।
শুরু থেকে খেলতে থাকা মুমিনুল থামেন ইনিংসের ১১তম ওভারে। তার আগে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩১ বল থেকে করেন ঠিক ৩১ রান। কিছু করতে পারেননি আসিফ আলিও। দলীয় ৬০ রানের মাথায় সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৭ বলে ৫ রান করেন তিনি।
অষ্টম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন থিসারা পেরেরা ও শাদাব খান। দুজন মিলে ৩০ বলে যোগ করেন ৪৪ রান। মাত্র ১৩ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ২৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন থিসারা। তখন বাধ্য হয়েই কাটা হাত নিয়ে ব্যাট করতে নামতে হয় মাশরাফি বিন মর্তুজাকে।
তখনও ইনিংসের বাকি ছিলো ১৪টি বল। যার মধ্যে দুটি মোকাবেলা করেন মাশরাফি। সে দুই বলে কোনো রান হয়নি। তবে অন্য ১২ বলে আরও ৪০ রান যোগ করে ঢাকা। শেষ দুই ওভারে ঝড় তুলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন শাদাব। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৫ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৪১ বলে ৬৪ রান করে। চট্টগ্রামের পক্ষে বল হাতে ৩টি উইকেট নিয়েছেন রায়াদ এমরিট। এছাড়া রুবেল হোসেন ও নাসুম আহমেদের ঝুলিতে জমা পড়েছে দুটি করে উইকেট।