দুই দলের জন্যই লড়াইটা ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। যদিও খুলনা টাইগার্স তুলনামূলক কম চাপে ছিল। এই ম্যাচে হারলেও আরেকটি সুযোগ পেতো। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের জন্য ছিল বাঁচা মরার লড়াই। সেই লড়াইয়ে বাঁচা হলো না কুমিল্লার, ৯২ রানের বড় হারে নিশ্চিত হয়ে গেল বিদায়। এই জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টুর্নামেন্টের চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করে ফেলেছে মুশফিকুর রহীমের খুলনা। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন তালিকার দুই নম্বরে।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের জয়ের লক্ষ্য ছিল ২১৯ রানের। এত বড় রানের চাপে শুরুতেই ভেঙে পড়ে দলটি। চালিয়ে খেলতে গিয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ৯৭ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা দলটি ধুঁকতে ধুঁকতে শেষতক ৯ উইকেটে ১২৬ রানে থেমেছে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসটি আসে উপুল থারাঙ্গার ব্যাট থেকে (২৩ বলে ৩২)। খুলনার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল শহীদুল ইসলাম। ৪ ওভারে ২৭ রান খরচায় তিনি নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ আমির আর আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
এর আগে এবারের বিপিএলের সেরা জুটি গড়েন মুশফিকুর রহীম আর মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের ১৬৮ রানের রেকর্ড জুটিতে ভর করেই ২ উইকেটে ২১৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে খুলনা টাইগার্স।
গতকালের (শুক্রবার) আগ পর্যন্ত এবারের বিপিএলের সেরা জুটিটি ছিল সিলেট থান্ডারের আন্দ্রে ফ্লেচার আর জনসন চার্লসের। চট্টগ্রামে গত ২১ ডিসেম্বর এই খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষেই ১৫০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ক্যারিবীয় তারকা। আজ মুশফিক-মিরাজ সেই রাগ যেন ঝাড়লেন কুমিল্লার ওপর, গড়লেন আসরের সেরা জুটির রেকর্ড।
অথচ টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল খুলনা। ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে নাজমুল হোসেন শান্তকে (১) এলবিডব্লিউ করেন কুমিল্লা পেসার ইরফান হোসেন।
এরপর ঝড় তুলতে চেয়ে বেশিদূর এগোতে পারেননি রাইলি রুশো। ১১ বলে ২৪ রান করে মুজিব উর রহমানের শিকার হন দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যান। ৩৩ রানে ২ উইকেট হারায় খুলনা।
পরের সময়টা শুধুই মিরাজ আর মুশফিকের। এবারের বিপিএলে ওপেনার বনে যাওয়া মিরাজ আগে থেকেই চালিয়ে খেলছিলেন। মুশফিক তার সঙ্গে যোগ দেয়ার পর সেই ঝড়টা দ্বৈত রূপ নেয়।
চার-ছক্কায় কুমিল্লার বোলারদের রীতিমত চোখের পানি নাকের পানি এক করে ছাড়েন দুই ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত এই জুটি আর ভাঙতে পারেননি সৌম্য-মুজিবরা। তৃতীয় উইকেটে ১৬৮ রান তুলে ১৯তম ওভারে এসে পায়ে টান পড়ে মিরাজের, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
৪৫ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৭৪ রানে ছিলেন মিরাজ। সেঞ্চুরির সুযোগ ছিল তার রেকর্ডগড়া জুটির সঙ্গী মুশফিকের। শেষ ওভারের শেষ বলে যখন স্ট্রাইকে গেছেন, নামের পাশে ৯৭ রান।
কিন্তু সৌম্য সরকারের ওভারের শেষ বলটিতে মাত্র এক রান নিতে পারেন মুশফিক। অপরাজিত থেকে যান ৯৮ রানে। ৫৭ বল মোকাবিলায় গড়া মুশফিকের চোখ ধাঁধানো ইনিংসটিতে ছিল ১২টি চার আর ৩টি ছক্কার মার।