২০১৯ সালের মতো নতুন বছরেও সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশিদের ফেরা অব্যাহত রয়েছে। গত সাতদিনে ৭৬৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার দিনগত রাতে সৌদি আরব থেকে ৫ নারীসহ ১৩২ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাত ১১টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ ও এসভি ৮০২ দুটি বিমানযোগে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে গত সাত দিনে ৪০ নারীসহ ৭৬৭ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।
সৌদি আবর থেকে ফেরত আসা নুর বেগম (৪০) জানান, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সৌদি আরব গিয়েছিলেন। সেখানে নিয়োগকর্তার নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফ হোমে। নিয়োগকর্তা ঠিকমতো খাবার ও বেতন দিতেন না। বেতন চাইলে নির্যাতন চালানো হতো। একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে একসঙ্গে দেশে ফিরেছেন যশোর জেলার খাদিজা বেগম, নারায়ণগঞ্জের সেফালী বেগম, ঝিনাইদহের শিল্পি খাতুন ও ঢাকার সুবর্ণা বেগম।
ডিপোর্টেশন ক্যাম্পে ১৬ দিন থাকার পর দেশে ফেরা রাজবাড়ীর রউছ শেখ জানান, মাত্র এক বছর আগে সৌদি আরব গিয়েছিলেন। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশ আটক করে। পুলিশের কাছে আকামা দেখিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এমনকি নিয়োগকর্তাও দায়িত্ব না নেয়ায় দেশে ফেরত পাঠানো হয়। রউছ শেখের সাথে দেশে ফিরেছেন নোয়াখালীর ফারুক, কুমিল্লার সাইফুল, চট্টগ্রামের তাসলিম আরিফ, পাবনার জুয়েল শেখসহ আরও ১৩২ বাংলাদেশি।
দেশে ফেরাদের অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কফিলের সাথে যোগাযোগ করলেও দায়িত্ব নিচ্ছে না। বরং কফিল প্রশাসনকে বলেছেন, ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।
এদিকে বরাবরের মতো দেশে ফেরত আসাদের মাঝে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার ও পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, নতুন বছরের শুরুতেই সাতদিনে ফিরলেন ৭৬৭ জন। এভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা দেশে ফিরছেন তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। আর এভাবে যেন কাউকে প্রতারিত না হতে হয়, যে কাজে গিয়েছেন সেই কাজই যেন পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্র ও দূতাবাসকে। এ ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।