কি ব্যাটিংটাই না করলেন সৌম্য সরকার! উইকেটের চারদিকে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটালেন। খেললেন চোখ ধাঁধানো এক ইনিংস। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না। শেষ করতে হলো ট্রাজিক হিরো হয়ে।
চলতি বিপিএলে প্রায় প্রতি ম্যাচেই রান পাচ্ছেন সৌম্য সরকার। তবে ফিফটি হচ্ছিল না। এবার সেই আক্ষেপ পূরণ করলেন। আরেকটু সুযোগ পেলে তো সেঞ্চুরিটাও করে ফেলতে পারতেন। সে সুযোগ হলো না। ৪৮ বলে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকলেন সৌম্য। আর তার এমন ইনিংসের পরও রাজশাহী রয়্যালসের কাছে ১৫ রানের হার দেখতে হলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে।
১৯১ রানের বড় লক্ষ্য। শুরুটা যেমন হওয়ার দরকার ছিল, তেমনটা পায়নি কুমিল্লা। দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি (১৫ বলে ১২) আর স্টিয়ান ফন জিল (২৩ বলে ২১) টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারেননি। ডেভিড মালানও ৫ বলে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন।
সতীর্থদের এমন ব্যর্থতার মাঝেও নিজের সহজাত ব্যাটিংটাই করে যাচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। শুরুই করেন দুই বাউন্ডারি দিয়ে। পরে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের আগ্রাসন চলেছে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত। কিন্তু ওই যে সতীর্থদের ব্যর্থতা! তারা তো বল নষ্ট করে দলকে বিপদে ফেলে গেছেন আগেই।
সৌম্যর ইনিংসটা তাই দলের পরাজয়ের ব্যবধানটাই যা কমিয়েছে। শেষ পর্যন্ত বিধ্বংসী সৌম্য অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৮৮ রানে, যে ইনিংসটি তিনি সাজান ৫টি চার আর ৬টি ছক্কায়।
এর আগে শুরুটা করেছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব আর শেষ করেন শোয়েব মালিক ও অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। এ তিন উইলোবাজের উত্তাল ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৯০ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজশাহী রয়্যালস।
টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা। তবে তাদের এ সিদ্ধান্তকে যথাযথ প্রমাণ করতে দেয়নি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। কুমিল্লার বোলারদের রীতিমত পাড়া মহল্লামানের বানিয়ে ছাড়েন মালিক-আফিফরা।
ব্যাট হাতে ফিফটি পান শোয়েব মালিক। ফিফটির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেন আফিফ হোসেন ও আন্দ্রে রাসেল। ঝড় তোলা ব্যাটিংয়ে শেষ ৭ ওভারে ৮৪ রান যোগ করেন রাসেল ও মালিক। আফিফ ৪৩ ও মালিক ৬১ রানে আউট হলেও রাসেল ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার আফিফ ও লিটন দাস। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান যোগ করে তাদের জুটি ভাঙে ৫৬ রানের মাথায়। ভালো শুরুর পর সানজামুল ইসলামের বোলিংয়ে আলগা শটে ক্যাচ আউট হন লিটন, করেন ১৯ বলে ২৪ রান।
একই পরিণতি ঘটে আফিফের সম্ভাবনাময় ইনিংসেরও। সৌম্য সরকারের বোলিংয়ে সরাসরি বোল্ড হওয়ার আগে ৬ চার ও ১ ছয়ের মারে ৩০ বলে ৪৩ রান করেন এ বাঁহাতি তরুণ। দলের রান তখন মাত্র ৮০। বেশি কিছু করতে পারেননি রবি বোপারা। আউট হয়ে যান ১২ বলে ১০ রান করে।
এরপরই কুমিল্লার বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরান রাসেল ও মালিক। উইকেটের চারদিকে শট খেলে দুজন মিলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। ইনিংসের একদম শেষ বলে রান আউট হন মালিক। ৫টি চারের সঙ্গে ৩ ছয়ের মারে ৩৮ বলে ৬১ রান করেন তিনি। অন্যদিকে অধিনায়ক রাসেল ৪ ছয়ের মারে ২০ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন।