পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আবিদ আলি। বয়স হয়ে গেছে ৩২। অথচ, টেস্ট অভিষেকই হয়নি তার। অবশেষে আবিদ আলির টেস্ট অভিষেক হলো ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। কিন্তু অভিষেকেই এমন রেকর্ড স্থাপন করলেন তিনি, যে রেকর্ড এর আগে এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনো ক্রিকেটারই করতে পারেননি।
রাওয়ালপিন্ডিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টের শেষ দিনে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করলেন আবিদ আলি। টেস্টের অভিষেকেই সেঞ্চুরি। এমন সেঞ্চুরি তো অনেকেই করে। অহরহ নজির রয়েছে। কিন্তু আবিদ আলি একটা ক্ষেত্রে অন্য সবার চেয়ে ব্যতিক্রম। কারণ, ওয়ানডে অভিষেকেও যে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি!
টেস্ট এবং ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটারে পরিণত হলেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। ক্রিকেটের ১৪০ থেকে ১৪৩ বছরের ইতিহাসে যে রেকর্ড আর কেউ করতে পারেনি। যদিও ওয়ানডে ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলার বিপুল অভিজ্ঞতা রয়েছে তার ঝুলিতে। টেস্ট দলের দরজা খুলতে সময় লেগে যায় একটু বেশিই। পাকিস্তান হয়ে ৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেললেও রাওয়ালপিন্ডিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় ৩২ বছর বয়সি আবিদ আলির।
দেরিতে হলেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন আবির্ভাবেই। নির্বাচকদের আস্থার যথাযথ মর্যাদা দিয়ে অভিষেক টেস্টেই দুর্দান্ত শতরান করলেন নবাগত পাক ওপেনার।
রাওয়ালপিন্ডিতে যখন আবিদ আলি হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন, তখন জায়ান্ট স্ক্রিন কিংবা টিভি স্ক্রিনে ভেসে উঠছিল, পাকিস্তানের মাটিতে গত ১০ বছরে টেস্টে এটাই প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। তবে রাওয়ালপিন্ডিতে আবিদ আলির আগে প্রথম সেঞ্চুরি পূরণ করেন বাবর আজম। ঘরের মাঠে প্রথম সেঞ্চুরি করার সৌভাগ্য অর্জন করলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী এই ব্যাটসম্যান।
এরপরই সেঞ্চুরি আসলো আবিদ আলির ব্যাট থেকে। ১৮৩ বল খেলে ১১টি বাউন্ডারি মেরে বিরল রেকর্ডের মাইলফলকে পা রাখেন আবিদ। শেষ পর্যন্ত ১০৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন বাবর আজম।
দীর্ঘ এক দশক পর পাকিস্তানের মাটিতে ফিরেছে টেস্ট ক্রিকেট। সেদিক থেকে দেশের মাটিতে কামব্যাক টেস্টে পাকিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার মুহূর্তটাকে শতরান দিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন আবিদ।
বৃষ্টিতে ম্যাচের প্রায় তিন দিনের খেলা নষ্ট হওয়ায় ফলাফল নির্ধারণ সম্ভব ছিল না। তবে ড্র ম্যাচে পাকিস্তানের বাড়তি পাওনা আবিদের দুরন্ত ব্যাটিং।
এর আগে মার্চে দুবাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল তার। ওই ম্যাচেই ১১২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তিনিই প্রথম ক্রিকেটার, যিনি দুই ফরম্যাটের অভিষেকেই সেঞ্চুরি করলেন।
রাওয়ালপিন্ডিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। প্রথম দিনের ৬৮.১ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময় ২০২ রান তোলে সিংহলিজরা। দ্বিতীয় দিনে খেলা হয় মাত্র ১৮.২ ওভার। শ্রীলঙ্কা আরও ১টি উইকেট হারিয়ে ৬১ রান যোগ করে দ্বিতীয় দিনে।
অর্থাৎ দ্বিতীয় দিনের শেষে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ২৬৩ রান। তৃতীয় দিনে খেলা হয় মোটে ৫.২ ওভার। শ্রীলঙ্কা তৃতীয় দিনের শেষে ৬ উইকেটে ২৮২ রানে দাঁড়িয়েছিল। চতুর্থ দিনের খেলা পরিত্যক্ত হয়। পঞ্চম দিনে শ্রীলঙ্কা তাদের প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করে ৬ উইকেটে ৩০৮ রান তুলে। এরপর ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান।