যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে বরিস জনসনের দল কনজারভেটিভ পার্টি। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এমন তথ্যই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
এবারের নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি এবং জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টি। নির্বাচনে দুই দলের হয়ে যারা লড়ছেন, তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।
অর্থাৎ এবারের ব্রিটিশ নির্বাচনে লড়ছেন বাঙালিরাও। এদের মধ্যে আলোচনায় ছিলেন পাঁচ বাঙালি নারী। তারা হলেন- টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী, রূপা হক, আফসানা বেগম ও ব্যারিস্টার মেরিনা মাসুমা আহমেদ। তারা পাঁচজনই লড়েছেন বামধারার রাজনীতিক দল লেবারের প্রার্থী হিসেবে।
এছাড়াও লেবার পার্টির হয়ে আবারডিন নর্থ আসনে নুরুল হক আলী ও সাউথওয়েস্ট হার্টফোর্টশায়ার আসনে আলী আখলাকুল, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দল থেকে কার্ডিফ সেন্ট্রাল আসনে বাবলিন মল্লিক ও উইয়ার ফরেস্ট আসনে সাজু মিয়া এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের পক্ষে হ্যারো ওয়েস্ট আসনে আনোয়ারা আলী লড়েছেন।
সর্বশেষ প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী, ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৬৩৫টি আসনের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৫৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি। এককভাবে সরকার গঠন করতে কনজারভেটিভদের প্রয়োজন ছিল ৩২৬টি আসন। এখন পর্যন্ত কনজারভেটিভরা পেয়েছে মোট ভোটের ৪৩ শতাংশেরও বেশি ভোট।
অন্যদিকে, প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টি পেয়েছে ২০২টি আসন। এছাড়া, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) পেয়েছে ৪৭টি আসন এবং অন্য আরও তিনটি দল ৩২টি আসন।
এদিকে এবারের নির্বাচনে বাঙালি প্রার্থীদের মধ্যে জয় লাভ করেছেন চার বাঙালি নারী। তারা হলেন- টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী, রূপা হক ও আফসানা বেগম।
টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ। তিনি উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লড়ে ২৮ হাজার ৮০টি ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় লাভ করলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের জনি লুক পেয়েছেন ১৩ হাজার ৮৯২টি ভোট।
এর আগে ২০১৫ সালে লেবার দলের মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মতো ব্রিটিশ এমপি নির্বাচিত জন টিউলিপ। ২০১৭ সালে পুনর্নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি এই আসনের এমপি হন।
রুশনারা আলী: টানা চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন সিলেটের রুশনারা। লেবার দলের হয়ে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনে ৪৪ হাজার ৫২টি ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভের নিকোলাস পেয়েছেন ৬ হাজার ৫২৮টি ভোট। এর আগে ২০১৭ সালের নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন রুশনারা আলী।
রূপা হক: এবার হ্যাটট্রিক করলেন রূপা হক। লেবার দলের হয়ে লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে ২৮ হাজার ১৩২টি ভোট পেয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় লাভ করেছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভের জুলিয়ান গালান্ট পেয়েছেন ১৪ হাজার ৮৩২টি ভোট। এর আগে ২০১৫ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন তিনি। একইভাবে ২০১৭ সালেও নির্বাচিত হন।
আফসানা বেগম: এবারই প্রথমবারের মতো লড়ে জয় লাভ করলেন আফসানা বেগম। লেবার পার্টির হয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকার পপলার অ্যান্ড লাইমহাউস আসনে ৩৮ হাজার ৬৬০টি ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হলেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভের শিউন পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৫৬টি ভোট।
অন্যদিকে দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনের বেকেনহাম আসন থেকে লড়ে হেরেছেন আরেক বাংলাদেশি নারী ব্যারস্টার মেরিনা মাসুমা আহমেদ। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে হারলেন তিনি।
এছাড়াও এবারের নির্বাচনে হেরেছেন আরও পাঁচ বাঙালি। তারা হলেন- লেবার পার্টির হয়ে আবারডিন নর্থ আসনের নুরুল হক আলী ও সাউথওয়েস্ট হার্টফোর্টশায়ার আসনের আলী আখলাকুল, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস দলের হয়ে কার্ডিফ সেন্ট্রাল আসনের বাবলিন মল্লিক ও উইয়ার ফরেস্ট আসনের সাজু মিয়া এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের পক্ষে হ্যারো ওয়েস্ট আসনের আনোয়ারা আলী।