বিদেশগামী কর্মীদের জন্য ‘প্রবাসী কর্মী বিমা’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থাকালে কোনো কর্মী দুর্ঘটনায় নিহত কিংবা আহত হলে কর্মীরা বিমা অংকের টাকা পাবেন। আগামী ১৯ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিমা কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। দুই বছর মেয়াদী এসব বিমার ক্ষেত্রে বিমা প্রিমিয়ামের অর্ধেক ভর্তুকি ওয়েজ আর্নার্স বোর্ড দেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।
বুধবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড ও জীবন বিমা করপোরেশনের মধ্যে ‘প্রবাসী কর্মী বিমা’ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।
ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, ‘১৯ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিমা সুবিধার উদ্বোধন করবেন। কোনো কর্মী বিমা সুবিধা না নিয়ে বিদেশে যেতে পারবে না, এটা আমাদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে। এই বিমার মাধ্যমে প্রবাসে আমাদের যেসব কর্মী যান তাদের সুরক্ষা অনেকটাই নিশ্চিত হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য বিমা সুবিধা চালু করতে নির্দেশ দেন। কিছুটা সময় লাগলেও আমরা সম্মতিত উদ্যোগে এটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। আমরা ধারণা করছি, আমরা যে দুই লাখ টাকার বিমা অঙ্ক নির্ধারণ করেছি, সেটি শ্রমিকরাই বাড়াতে বলবে। সেক্ষেত্রে আমরাও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জায়গা রেখেছি। শ্রমিকদেরও বিমা সম্পর্কে জানতে হবে।’
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম এবং জীবন বিমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেলীনা আফরোজ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বৈদেশিক শ্রমিকরা নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছে। বিমাটা তাদের জন্য প্রয়োজন। দিনে দিনে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে আমাদের অভিবাসীরা কেন বিমা সুবিধার বাইরে থাকবে? কর্মীদের বুঝতে হবে এটি তাদের ওপর কোনো চাপ নয়, বরং এই বিমা তাদের জন্য সুরক্ষা বয়ে আনবে।‘
গৃহিত বিমা সুবিধায় দুটি বিমার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যার একটির বিমা অংক দুই লাখ টাকা, অন্যটি পাঁচ লাখ টাকার। এরমধ্যে দুই লাখ টাকার বিমার ক্ষেত্রে এককালীন ৯৯০ টাকা প্রিমিয়াম জমা দিতে হবে। যার ৫০০ টাকা প্রদান করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং ৪৯০ টাকা প্রদান করবে বিদেশগামী কর্মী।
পাঁচ লাখ টাকার বিমার ক্ষেত্রে এককালীন পরিশোধ করতে হবে দুই হাজার ৪৭৫ টাকা। যার ৫০০ টাকা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং বাকিটা কর্মী বহন করবে। বিদেশে অবস্থানকারী কর্মীরা দুর্ঘটনাজনিত কারণে নিহত, আহত বা অঙ্গহানী ঘটলেই কেবল বিমা অংকের টাকা পাবেন। নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে কর্মীরা জমা দেয়া বিমা প্রিমিয়ামের টাকা ফেরত পাবেন না। এই বিমা মেয়াদ রাখা হয়েছে দুই বছর। তবে কর্মীরা চাইলে সে মেয়াদ প্রতিবার বাড়াতে পারবেন।