দেশের অর্থনীতির চাকা যেসব রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের মাধ্যমে গতিশীল হচ্ছে, তাদের মধ্যে একজন অন্যতম ভেনিসের সফল ব্যবসায়ী সফিক গাজী। ইতালিতে পাড়ি জমানোর পর প্রথম দিকে তিনি ৭ মাস বেকার ছিলেন। কঠোর পরিশ্রমের ফলে আজ তিনি (জাহাজ নির্মাণ) দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক।
ইতালিতে পর্যটকদের আনাগোনার ফলে দিনেদিনে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারিত হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে সফলতার শিখরে পৌঁছে যাছেন। তাদের মধ্যে একজন সফিক গাজী। তিনি সফল ব্যবসায়ী হিসেবে ইতালির ভেনিসে সুনাম অর্জন করেছেন।
জানা গেছে, বিশ্বের বড় বড় জাহাজ নির্মিত হয় স্বপ্নের নগরী ভেনিসে। সেই জাহাজ নির্মাণের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক এই বাংলাদেশি। ইতালিতে যে ক’জন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী রয়েছেন তাদের মধ্যে মোহাম্মদ সফিক গাজী অন্যতম। ভেনিস ও পালেরমোতে তার দুটি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি ১২৫ এবং বিদেশি ২৫ জন শ্রমিক রয়েছেন।
মেধা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। তার সফলতার কারণে অনেক বাংলাদেশি এখন শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তার এ সফলতাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না অসাধুরা।
সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মনক্ষুণ্ন হয়ে বলেন, সম্প্রতি ভেনিসের কিছু প্রতিষ্ঠানে দেশটির পুলিশ অভিযান চালায়। এর মধ্যে তার প্রতিষ্ঠানও ছিল। অথচ কারও নামে কোনো বদনাম না ছড়িয়ে অনেকে আমার সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বদনাম ছড়িয়ে আমার সম্মান নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু আমি এতে মোটেই বিচলিত নই। কারণ আল্লাহ সহায় থাকলে কেউ আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।
তিনি জানান, গত ১৮ বছরে আমার নামে ইতালিতে কোনো মামলা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু বাংলাদেশি ষড়যন্ত্র করে আমার নামে মামলা করে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। গত ১৯ বছরে আমার কোম্পানি থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে বর্তমানে অন্য কোম্পানিতে চাকরি করছেন প্রায় ১২শ থেকে ১৩শ শ্রমিক।
সফিকের বাড়ি উপমহাদেশের গৌরবময় জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ২০০০ সালে তিনি ইতালির রোমে আসেন। রোমে ৭ মাস বেকার থাকার পর ভেনিস এসে ৪ বছর তিনি শিপে কাজ করেন। এরপর নিজেই ২০০৪ সালে জাহাজ নির্মাণে ঠিকাদারী কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। ভেনিসে গড়ে তোলেন দুটি প্রতিষ্ঠান। একটি গার্জী এস আর এল এবং চি এন বি কোম্পানি।
এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি মনে করেন মানুষের মাঝে সততা থাকলে নিশ্চয়ই সে একদিন তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। তার অধীনে কাজ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেমন উপকৃত হচ্ছে তেমনিভাবে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন তিনি।