বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শ্বশুর-শাশুড়িকে ভরন-পোষণ না দেয়া ও ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া এবং মারধরের অভিযোগে এক গৃহবধূকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আস্কর গ্রামের ভবসিন্দু বৈরাগীর ছেলে ভ্যান চালক খোকনের স্ত্রী মনিকা তার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী ও শাশুড়ি বিমলা বৈরাগীকে খাবার না দিয়ে তাদের প্রায়ই মারধর করতেন। এমনকি তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়া হয়।
এই অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসের কাছে ভবসিন্ধু বৈরাগী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুত্রবধূ মনিকাকে চিঠি দেয়া হলেও তিনি নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে হাজির হননি। এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস ও সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা ভবসিন্ধুর বাড়িতে গিয়ে তার কথা শোনেন। এসময় পুত্রবধূ মনিকা বৈরাগীও উপস্থিত ছিলেন। কথা শুনে মনিকাকে পুলিশ গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসের আদালতে হাজির করলে মনিকা বৈরাগীকে আদালত একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন।
মনিকার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী জানান, ছয় মাস ধরে আমাকে ও আমার স্ত্রী বিমলা অধিকারীকে ঘরের বারান্দায় থাকতে দেয় মনিকা। আমাদের তিনবেলা খাবারও দেয় না। রান্নাঘরে রান্না করতে গেলে গালাগাল শুরু করে। এছাড়া আমাদের মারধরও করে। আমরা যতক্ষণ ঘরের বারান্দায় থাকি ততক্ষণ আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। বিষয়টি আমার ছেলে খোকনকে জানলেও সে বউয়ের ওপর কোনো কথা বলতে পারে না। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। খাবার না দেয়ায় শামুক সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে আমাদের দু’জনের কোনো রকমে চলে যায়।
তিনি আরো বলেন, খাবার না দিলেও আমার কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু মনিকা এখন আমাদের ঘর থেকে বের করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ কারণে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে সে। আমরা এখন কোথায় যাবো? তাই লিখিতভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে জানাই। আজ বুধবার সকালে পুলিশ পুত্রবধূ মনিকা বৈরাগীকে বরিশাল জেল হাজতে পাঠিয়েছে।