Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

canada-muslimকানাডায় গত ২১ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বিজয়ী ১২ জন মুসলিম প্রার্থীর মধ্যে চারজন নারীও রয়েছেন। ১১ জন ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি থেকে এবং একজন কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। কানাডার জাতীয় নির্বাচনে মুসলিম বিজয়ী প্রার্থীদের এই সংখ্যা অতীতের যেকোনো নির্বাচনের চেয়ে বেশি।

ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি এই নির্বাচনে ১৫৭ আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। তবে গত নির্বাচনের তুলনায় তারা ২০ আসন কম পেয়েছে। বিপরীতে বিরোধী কনজারভেটিভদের আসন সংখ্যা ২৬টি বেড়ে ১২১ হয়েছে। কানাডার মুসলিম-নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা মুসলিম লিংক এ খবর জানিয়েছে।

chardike-ad

ওমর আল-গাবরা: বিজয়ী মুসলিম প্রার্থীদের মধ্যে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ওমর আল-গাবরা তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মিসিয়াগু সেন্টারে লিবারেল পার্টির হয়ে নির্বাচন করেন। তিনি হাউজ অব কমন্সে ২০০৬ থেকে ২০০৮ মেয়াদ পর্যন্ত ছিলেন। এরপর ২০১৫ সালে আবার নির্বাচিত হন তিনি। স্থানীয় এবং জাতীয় ইস্যু নিয়ে আল-গাবরা সব সময় সরব ছিলেন। বিশেষ করে নাগরিকত্ব ও অভিবাসন ইস্যুতে তিনি শক্ত অবস্থানে ছিলেন।

ইকরা খালিদ: ইরিন মাইলস থেকে লিবারেল পার্টির পক্ষে এই আসনে প্রথমবারের মতো বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন ইকরা খালিদ। ইরিন পাকিস্তান বংশদ্ভূদ কানাডার নাগরিক। ২০০৭ সালে ইয়র্ক ইউনির্ভাসিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। একই সাথে দুটি বিষয়- ক্রিমিনোলজি ও প্রফেশনাল রাইটিংয়ের ওপর গ্রাজুয়েশন করেন। তিনি বলেন, ‘চার বছর ধরে আমরা স্থানীয়দের কথা শুনছি এবং সে হিসেবে কাজ করছি।’

জিয়াদ আবুল তায়েফ: অটোয়ার অ্যাডমন্টন ম্যানিং সেন্টারে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচিত একমাত্র মুসলিম এমপি হলেন জিয়াদ আবুল তায়েফ। অ্যাডমন্টন জার্নাল এই তথ্য জানিয়েছে। তায়েফের প্রতিদ্বন্দ্বিও ছিলেন একজন মুসলিম। লিবারেল পার্টির কামাল কাদরিকে হারিয়ে জয় পান তিনি।

তায়েফ বলেন, এমপি’দের দায়িত্ব কানাডা ও এর জনগণের সেবা করা। প্রত্যেকের দায়িত্ব এটাই হওয়া উচিত। আমি জনগণের ওপর বিশ্বাস করি। আমি কাজে বিশ্বাসী। কাজের মাধ্যমে আমি জনগণের পাশে থাকতে চাই।

সালমা জাহিদ: স্কারবো সেন্টারে দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন সালমা জাহিদ। কনজারভেটিভ পার্টির ইরশাদ চৌধুরীকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। টরেন্টো স্টারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমা জাহিদ বলেন, স্কারবো সেন্টারের মানুষের সেবা করাটা আমার জন্য খুব সম্মানের।

তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয়, এখনই সময় আমার পরিবারের জন্য কিছু করার। এবং যখন আমি মানুষের সাথে কথা বলি ওই ইস্যু নিয়ে কাজ করি। নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি যে, দুই শ’ দেশের মানুষের সাথে আমার কথা হয়। সবার কথাই প্রায় এক, তারা চায় ভালো থাকতে, একটি চাকরী চায়, ভালো একটি পরিবেশে বসবাস করতে চায় এবং সর্বোপরি বেড়ে উঠার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ চায়।

আলী ইহসাসি: উইলোডেলে লেবারেল পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন আলী ইহসাসি। টরেন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে বি এ করেছেন ইহসাসি। আর সাইন্সে মাস্টার্স করেছেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক্স থেকে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় ভোটারের সাথে যোগাযোগ রেখেছি এবং ইতিবাচক ছিলাম। সে কারণেই হয়ত আমরা এগিয়ে আছি।

মারিয়াম মুনসেফ: পিটারবার্গ কাওয়ার্থা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মারিয়াম মুনসেফ। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির মিশেল স্কিনারকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। মুনসেফ ওমেন অ্যান্ড জেন্ডার কোয়ালিটি মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ২৬ হাজার ৬৫৮ ভোট পেয়েছেন। আর স্কিনার ২৩ হাজার ৬০৬।

জয়ের পর তিনি বলেছেন, প্রতিটা ভোটই গুরুত্বপূর্ণ। এবং আপনারা সেই ভোটগুলো আজ আমার ঘরে নিয়ে এসেছেন। ২০১৫ সালে প্রথম মুসলিম এবং সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে কেবিনেটে ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী মারিয়াম।

ইয়াসমিন রাতানসি: ডন ভ্যালি ইস্ট থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ইয়াসমিন রাতানসি। কনজারভেটিভ প্রার্থী মিশেল মা’কে পরাজিত হয়েছেন তার কাছে। ২০০৪ সালে পার্লামেন্টে নির্বাচিত প্রথম মুসলিম নারী ছিলেন তিনি।

আরিফ ভিরানি: দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন আরিফ ভিরানি। পার্কডেল-হাইপার্ক থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচিত হন তিনি। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন এনডিপির পল টেইলর।

সামির জুবেরি: পেরিফন্ড-ডলারডে’তে লিবারেল পার্টি থেকে নির্বাচিত হন সামরি জুবেরি। কনজারভেটিভ পার্টির মারিয়াম ইশাককে হারিয়েছেন তিনি।

মাজিদ জোওহারি: কনজারভেটিভ পার্টির কস্টাস মেনেজাকিসের সাথে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে মাজিদ জোওহারির। রিচমন্ড হিল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

আহমেদ হুসেন: ইয়র্ক সাউথ ওয়েস্টোনে লিবারেল পার্টি থেকে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হয়েছেন অভিবাসন মন্ত্রী আহমেদ হুসেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রথম নির্বাচিত হন এই আইনজীবী। তখন অভিবাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। লিবারেল পার্টির জন ম্যাককুলাম পদত্যাগ করলে তিনি এ দায়িত্ব পান। ইয়র্ক ইউনির্ভাসিটি থেকে ইতিহাসে পড়াশোনা করেন তিনি। এছাড়া ওটোয়া ইউনির্ভাসিটিতে আইন বিষয়ে পড়েন সোমালিয়া বংশদ্ভুত এই নেতা।

সূত্র : মুসলিম লিংক