নিজের মৃত শিশুকে দাফন করতে কবর খুঁড়তে গিয়ে তিন ফুট মাটির ভেতর থেকে আরেক জীবিত শিশুকে উদ্ধার করেছেন ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক ব্যবসায়ী। কিছুদূর খোঁড়ার পরই মাটির পাত্রে কোদালের আঘাত লাগার পর মাটি সরিয়ে জীবিত ওই নবজাতকের খোঁজ পান তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করার পরপরই পুলিশকে খবর দেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের বরেলি জেলায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা সদ্যোজাত এখনও জীবিত আছে। প্রসঙ্গত, উদ্ধার হওয়া শিশুটি কন্যাসন্তান।
জানা গেছে, চাপা দেয়া মাটির ভেতর শিশুটির ছোট্ট ফুসফুস আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল অবশিষ্ট অক্সিজেনটুকু শুষে নেয়ার। হিতেশ কুমার সিরোহি নামের ওই ব্যক্তি তার সদ্যোজাত মৃত কন্যার কবর খুঁড়তে গিয়েই নবজাতক ওই জীবিত কন্যা শিশুর সন্ধান পায়।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তারা ধারণা করছে শিশুটিকে জীবন্ত কবর দেয়ার মতো এই মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে তার বাবা-মায়ের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তারা ইতিমধ্যে নবজাতকের প্রকৃত বাবা-মায়ের সন্ধানে নেমেছে।
গ্রামবাসী কবর থেকে জীবিত কন্যাশিশুটি উদ্ধারের পর পুলিশকে খবর দিলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। শিশুটি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অবস্থা এখন কিছুটা উন্নতির দিকে। তারা শিশুটিকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
বরেলির পুলিশ সুপার অভিনন্দন সিংহ জানিয়েছেন, শিশুটির চিকিত্সা চলছে। আগের থেকে অনেকটা শারীরিক উন্নতি হয়েছে তার। তার বাবা-মার খোঁজ চলছে। জীবন্ত শিশুকে কবর দেওয়র অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ভারতে এখনও অনেক স্থানে তীব্র লিঙ্গ বৈষম্য বিদ্যমান। দারিদ্রতার কারণে অনেক পরিবার এখনও মেয়ে সন্তানকে পরিবারের বোঝা মনে করে। এ কারণে নিষিদ্ধ থাকলেও অনেক স্থানে এখনও অবৈধভাবে কন্যা ভ্রুণ মেরে ফেলা হয়। এমনকী জন্মের পরও বিভিন্ন স্থানে কন্যা শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে।