দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত বিনা বেতনে শিক্ষকতা করছেন প্রতিবন্ধী কোহিনুর আখতার বিউটি। তিনি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিনগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা। ২৫ বছরেও চাকরি এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় মানবেতর জীবনের মধ্যদিয়েও শিক্ষকতা করে আসছেন।
জানাযায়, বিউটি আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রামের স্টেশন পাড়ার মৃত মোতাহার হোসেনের মেয়ে। তিনি ৪ ভাই বোনের মধ্যে বড়। প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মা নেওয়া বিউটির দুটি পায়ের হাটু নড়াচড়া করতে না পারায় (ফিক্সড হওয়ায়) লাঠিতে ভর করে হেলেদুলে চলতে হয়।
শারিরিক ভাবে প্রতিবন্ধী হলেও তার অদম্য মেধা শক্তি দিয়ে ১৯৮৬ সালে এসএসসি, ১৯৮৯ সালে এইচএসসি ও ১৯৯৪ সালে ডিগ্রী পাশ করেন। এরপর কোথাও চাকরির চেষ্টা না করে তার মামা লুৎফর রহমান সরকারের দানকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়ে ১৯৯৫ সালে জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন।
এরপর থেকে এমপিওর আশায় বিনা বেতনে পাঠদান করে যাচ্ছেন। ২০০২ সালে প্রাথমকি ভাবে বিদ্যালয়টি ৮ম শ্রেনি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত করা হলে ৬ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী বেতন ভাতাদী পেয়ে থাকেন। কিন্ত নবম ও দশম শ্রেণীতে এমপিও না হওয়ায় বেতন জোটেনি বিউটির ভাগ্যে।
শুধু তাই নয় নবম ও দশম শ্রেণীতে এমপিও না হওয়ার কারণে বিউটিসহ ৩ জন শিক্ষক ও ১জন নৈশ প্রহরী প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বিনা বেতনে চাকরি করে আসছেন। ফলে তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিনা বেতনে চাকরি করলেও তাদের প্রচেষ্টায় ২০১৯ইং সালের এসএসসি পরীক্ষায় ২৯ জন অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৫জন সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষকা কোহিনুর আখতার বিউটি আক্ষেপ করে বলেন, ২৫ বছর যাবৎ বিনা বেতনে পাঠদান করে আসছি আরও কতোদিন করাতে হবে তা আমার জানা নেই। প্রতিবছর এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসিতে ভালো ফলাফল করছে তারপরও কেন নবম-দশম শ্রেণীতে এমপিও হলো না এটা ভাবতে অবাক লাগে।
আদমদীঘি উপজেলা ম্যাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের জন্য টেÐার হয়েছে। শিগগিরই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এছাড়া নবম-দশম শ্রেণিতে এমপিও করার জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে।