দক্ষিণ কোরিয়াতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় সংগঠন “বাংলাদেশী স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া(বিএসএকে)” ২০১১ সালে একদল তরুণ এবং উদ্যমী শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে কোরিয়াতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নানাবিদ প্রয়োজনে সেবা প্রদানসহ বিবিধ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তার নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রেখেছে। সময়ের পরিক্রমায় সংগঠনটি শুধুমাত্র স্বদেশী শিক্ষার্থীদের কাছেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি বরং বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছেও দিন দিন বাড়ছে তার গ্রহণযোগ্যতা।
চলতি মাসের ২৪ ও ২৫ তারিখে দঃ কোরিয়ার হান্নাম ইউনিভার্সিটিতে “সোসাইটি অফ নেপালিজ স্টুডেন্টস ইন কোরিয়া (সনসিক)” কর্তৃক আয়োজিত দুইদিন ব্যাপী “১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯” অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বিএসএকের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং বিএসএকের কার্যনির্বাহী পরিষদের ৩জন প্রতিনিধি সভায় যোগদান করে। সনসিক কর্তৃক আয়োজিত “১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা ২০১৯” তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিউলস্থ নেপাল দুতাবাসের এম্বাসেডর জনাব রাম সিং থাপা যিনি বিএসএকের প্রতিনিধিদের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান এবং এই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধমে আন্তর্জাতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে এক সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
সভাটিতে বিএসএকের পক্ষে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএকের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য জনাব এস. এম. নাসির উদ্দিন, জনাব মিলন চৌধুরী এবং জনাব মোঃ গোলাম রাব্বানী। যাদের মধ্যে মোঃ গোলাম রাব্বানী বিএসএকের বর্তমান কার্যক্রম এবং কার্যপরিচালনা পরিষদ সম্পর্কে উপস্থিত সবাইকে অবহিত করার পাশাপাশি সংগঠনটির ভবিষ্যৎ কিছু সম্ভব্য পরিকল্পনার কথাও ব্যক্ত করেন।
বিএসএকের প্রতিনিধিবৃন্দের পাশাপাশি সভাটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কোরিয়াস্থ ঘানা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (ঘাএসকেএ)এর প্রতিনিধগণ। যারা তাদের মূল্যবান বক্তব্যের একপর্যায়ে বিএসএকেও এখন থেকে সনসিকের পাশাপাশি আরো একটি সহযোগী সংগঠন হিসেবে তাদের পাশে পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেন। ফলে বিএসএকের সাথে আন্তর্জাতিক পৃষ্টপোষকতায় কার্যক্রম পরিচালনায় ফিলিপাইন এবং নেপালের সাথে এবার ঘানা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যত দিনগুলোতে যৌথ উদ্যোগে একাডেমিক কনফারেন্স, এবং সেমিনারসহ নানাবিদ অনুষ্ঠান আয়োজনের পথকে সুগম করে।
মুলত; এই ধরনের আন্ত-সম্পর্কিত কার্যক্রম শুরু হয়েছে চলতি বছরের ২৯শে জুন সিউলের এশিয়ান-কোরিয়ান সেন্টারে ফিলিপাইন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (পিকো), সোসাইটি অফ নেপালিজ স্টুডেন্টস ইন কোরিয়া (সনসিক) এবং বাংলাদেশী স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া(বিএসএকে)র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “আন্তর্জাতিক রিসার্চ কলোকিউম ২০১৯” এর মধ্য দিয়ে।
যার ফলশ্রুতিতে কোরিয়াতে বিএসএকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছেও বাংলদেশী শিক্ষার্থীদের সেবায় নিয়োজিত অন্যতম সংগঠন হিসেবে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। যেখানে শুধুমাত্র বিএসএকের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরাই নন বরং সংগঠনটির দিক-নির্দেশক হিসেবে উপবিষ্ট বর্তমান উপদেষ্টামণ্ডলীও স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন।
পরিশেষে, বিএসএকে ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের এই ধরনের যৌথ আয়োজন আন্ত-সম্পর্কিত কার্যক্রম বৃদ্ধির পথকে আরো গতিশীল এবং কোরিয়াতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য বহুমাত্রিক সম্ভবনার দ্বার উন্মোচনে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। আর এভাবেই বাংলাদেশী স্টুডেন্ট’স অ্যাসোসিয়েশন ইন কোরিয়া (বিএসএকে) তার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করে “ব্রান্ডিং বাংলাদেশে”র ধারক-বাহক হিসেবে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
বিএসএকে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন www.bsak.org/ অথবা বিএসএকে ফেইজবুক গ্রুপ এবং যোগাযোগ করতে পারেন- webbsak@gmail.com
লেখকঃ-
মোঃ গোলাম রাব্বানী
বিএসএকে কার্যনির্বাহী সদস্য ও
পিএইচডি গবেষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
চোন্নাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া।
কৃতজ্ঞতায়– বিএসএকে কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০১৯