বেসরকারি উদ্যোগে হেলিপোর্ট স্থাপন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতিমালা করতে যাচ্ছে সরকার। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী, ‘হেলিপোর্ট অপারেটরস লাইসেন্স’ গ্রহণের পর নিম্নমানের বা অনিরাপদ সেবা দিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি পেতে হবে। এছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন কোনো ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড করতে ‘রুফটপ হেলিপ্যাড নীতিমালা’ও করছে সরকার।
হেলিকপ্টার সেবাকে নিয়ম-কানুনের আওতায় আনতে ‘হেলিপোর্ট স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১৯’ ও ‘রুফটপ হেলিপ্যাড নীতিমালা-২০১৯’ এর খসড়া তৈরি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সিভিল এভিয়েশন) জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘আমরা প্রথমে হেলিপোর্ট ও রুফটপ হেলিপ্যাড নীতিমালার খসড়া করি। পরে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পর ওই খসড়া দু’টি পরিমার্জন করা হয়। এরপর এটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামতগুলো নিয়ে আমরা ঈদের পর আরেকটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে খসড়া দুটি চূড়ান্ত করব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এটি একটি নতুন জিনিস, তাই বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে নীতিমালা করতে হবে। আমরা একতরফাভাবে কিছু করতে চাই না।’
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গত দুই দশকে বাংলাদেশের আকাশসীমায় হেলিকপ্টার চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে হেলিকপ্টারগুলো বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানি বা ইন্ডাস্ট্রির কর্মকর্তরা তাদের নিজস্ব ইন্ডান্ট্রি বা স্থাপনায় যাতায়াত ও অন্যান্য কর্পোরেট কাজে বেশিরভাগ ব্যবহার করছেন।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে চলাচল এবং রোগী পরিবহনের মত জরুরি প্রয়োজনে ভাড়ায়ও হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ধরনের অতীব জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত চলাচলের পরিবহন হিসেবে হেলিকপ্টারের চাহিদা যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত প্রসার লাভ করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই বলেও মনে করছে মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ইস্যু করা এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেট (এওসি)প্রাপ্ত ৮টি হেলিকপ্টার পরিচালনা সংস্থার বহরে প্রায় ২৮-৩০টি হেলিকপ্টার রয়েছে। সবগুলো হেলিকপ্টার সংস্থারই অপারেশনাল অফিস এবং হেলিকপ্টারের হ্যাংগার স্থাপনের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ বিমানবন্দর থেকেই সংস্থাগুলো প্রতিদিন তাদের অপারেশন পরিচালনা করে এবং রাতে বিমানবন্দরেই অবস্থান করে।
বিমান মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, হেলিকপ্টার সংস্থাগুলোর বহরে প্রতিনিয়ত আরও নতুন নতুন হেলিকপ্টার যুক্ত হচ্ছে এবং আরও কয়েকটি হেলিকপ্টার সংস্থা এয়ার অপারেটরস সার্টিফিকেটপ্রাপ্তির আবেদন প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু শাহজালাল বিমানবন্দরে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বিমানবন্দরগুলোতে বর্তমানে জায়গার স্বল্পতায় নতুন কোনো হেলিকপ্টার সংস্থাকে এয়ার অপারেটর সাটিফিকেট দেয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। হেলিকপ্টার এ বিমানবন্দর থেকে পরিচালিত হওয়ার কারণে বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক মুভমেন্টও বাড়ছে, যে কারণে হেলিকপ্টারসহ অন্যান্য শিডিউল ফ্লাইটের চলাচল বিলম্বিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, হেলিকপ্টার অপারেটরদের সমস্যার কারণে ইতোমধ্যে কয়েকটি সংস্থা নিজ খরচে হেলিপোর্ট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাই বেসরকারি উদ্যোগে হেলিপোর্ট স্থাপন, অনুমোদন পদ্ধতি, পরিচালনার কারিগরি নির্দেশাবলী এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে একটি নীতিমালা করা হচ্ছে।
হেলিপোর্ট স্থাপনের জন্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা তুলে ধরে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, হেলিপোর্ট স্থাপনকারী বা প্রত্যাশীকে বাংলাদেশে নিবন্ধিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা বিধিবদ্ধ সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হতে হবে। প্রত্যাশী প্রতিষ্ঠানের আবেদনে হেলিপোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ এবং হেলিপোর্টের জন্য জরুরি বলে বিবেচিত অবকাঠামো এবং নেভিগেশন, যোগাযোগ, সার্ভেইল্যান্স, ল্যান্ডিং, সিকিউরিটি ইত্যাদি যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের সংকুলান বা পর্যাপ্ত অর্থ প্রাপ্তির প্রমাণ থাকতে হবে।
হেলিপোর্টে পরিকল্পিত পরিমাপের হেলিপ্যাড, হেলিপ্যাডের চারিদিকে অত্যাবশ্যকীয় নিরাপদ ও প্রতিবন্ধকতামুক্ত এলাকা, হেলিকপ্টার পার্কিং, ট্যাক্সিওয়ে, টার্মিনাল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য বেবিচক নির্ধারিত পরিমাণের ও পরিমাপের জমি প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব নামে বা প্রস্তাবিত স্থানটি হেলিপোর্ট নির্মাণের জন্য পাওয়া যাবে বলে যথাযথ আইনসিদ্ধ চুক্তিপত্র বা সরকারি প্রত্যয়ন থাকতে হবে।
হেলিপোর্টের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হিসেবে বেবিচক নির্ধারিত স্থাপনাদি ও যন্ত্রপাতিসহ একটি হেলিপোর্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নির্ধারিত সংখ্যক জনবল হেলিপোর্ট স্থাপনকালে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে হবে।
প্রস্তাবিত হেলিপোর্টে কমপক্ষে নিম্নবর্ণিত জমি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি অন্তর্ভুক্ত থাকবে- হেলিপোর্টে অবতরণ বা উড্ডয়নের জন্য সব ধরনের হেলিকপ্টারের জন্য প্রযোজ্য পরিমাপের কমপক্ষে ২টি হেলিপ্যাড, কমপক্ষে ১০টি নিরাপদ হেলিকপ্টার পার্কিং, অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের সুবিধা থাকতে হবে। এছাড়া সংযোগ ট্যাক্সিওয়ে, মেইনটেনেন্স এরিয়া, হেলিপ্যাডের চারিদিকে অত্যাবশ্যকীয় নিরাপদ ও প্রতিবন্ধকতামুক্ত এলাকা থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় সকল ধরনের যোগাযোগ যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় উচ্চতার এটিসি কন্ট্রোল টাওয়ার, পূর্ণাঙ্গ ফায়ার ফাইটিং সুবিধাসহ একটি ফায়ার স্টেশন, নেভিগেশন ও ল্যান্ডিং যন্ত্রপাতি এবং আবহাওয়ার তথ্যাদি পাওয়ার যন্ত্র বা সুবিধা, প্রয়োজনীয় সিকিউরিটি ও অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং যাত্রী সুবিধাদিসহ টার্মিনাল ভবন থাকতে হবে।
হেলিকপ্টার সংস্থার দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা, মালামাল সংরক্ষণ ও মেরামত বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অফিস বা জায়গার সুবিধা, হেলিপোর্ট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের অফিস; হেলিপ্যাড, পার্কিং এলাকা, ট্যাক্সিওয়ে, মেইনটেনেন্স এলাকা, টার্মিনাল ভবন এবং অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য কমপক্ষে ৭ একর জমি এবং হেলিপোর্টের জন্য প্রস্তাবিত এলাকায় যাত্রীদের চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত কার পার্কিং ব্যবস্থা থাকতে হবে।
জনস্বার্থে জরুরি প্রয়োজনে অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে সাময়িকভাবে হেলিপোর্ট ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার অঙ্গীকারনামা থাকতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের সরকার অনুমোদিত সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন-কেপিআই) কেন্দ্র থেকে নিরাপদ দূরত্বে হেলিপোর্ট নির্মাণের পরিকল্পনা করতে হবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
খসড়া নীতিমালায় আরও বলা হয়, ‘হেলিপোর্ট অপারেটরস লাইসেন্স’ গ্রহণের পর লাইসেন্সে বর্ণিত শর্তাদি বা চাহিদা ভঙের ক্ষেত্রে এবং নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে নিম্নমানের বা অনিরাপদ সেবা দেয়ার কারণে বেবিচক প্রযোজ্য দণ্ড ও জরিমানা আরোপ ও লাইসেন্স বাতিল বা অপারেশন স্থগিত করতে পারবে।
হেলিপোর্ট নির্মাণ বা স্থাপনের অনুমোদন গ্রহণের ক্ষেত্রে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে কাগজপত্রসহ বেবিচক নির্ধারিত পদ্ধতিতে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে হালনাগাদ নিবন্ধন সম্পর্কিত ও প্রয়োজনীয় অর্থের উৎস সম্পর্কিত কাগজপত্র, জমি সম্পর্কিত কাগজপত্র, হেলিপোর্টের নকশা, জনবল কাঠামো এবং হেলিপোর্ট স্থাপনা ও পরিচালনা সংশ্লিষ্ট কাজে তাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
আবেদনপ্রাপ্তির পর বেবিচক সকল অপারেশনাল বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে হেলিপোর্টের জন্য প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন ও কাগজপত্র প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রস্তাবিত হেলিপোর্টটি অনুমোদনযোগ্য কি-না সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হলেই বিস্তারিত প্রতিবেদনসহ আবেদনপত্রটি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয় হেলিপোর্টের স্থাপনের প্রস্তাবের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; সুরক্ষা সেবা বিভাগ; জননিরাপত্তা বিভাগ; প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়; ডিজিএফআই এবং এনএসআই-এর প্রাথমিক মতামত নেবে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ থেকে মতামত পাওয়ার পর একটি কমিটির মাধ্যমে প্রস্তাবটি যাচাই করে মন্ত্রণালয় নীতিগত অনুমোদন দেবে বা পরামর্শসহ ফেরত দেবে। এ কমিটির আহ্বায়ক হবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ)।
মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদনের পর বেবিচক হেলিপোর্ট নির্মাণের অনুমোদন করবে এবং আবেদনকারী সংস্থা সকল শর্ত, আদর্শ ও সম্মতি এবং নির্ধারিত নকশা অনুসরণে হেলিপোর্ট স্থাপন করছে কি-না সেই বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
হেলিপোর্ট নির্মাণ সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হেলিপোর্টের পরিচালনার জন্য বেবিচক নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ‘হেলিপোর্ট অপারেটরস লাইসেন্স’ গ্রহণ করবে। ‘হেলিপোর্ট অপারেটরস লাইসেন্স’ এর মেয়াদ হবে এক বছর এবং বেবিচক নির্ধারিত সব শর্তাদি বা চাহিদা পূরণ সাপেক্ষে প্রতিবছর নবায়ন করা যাবে।
‘হেলিপোর্ট অপারেটরস লাইসেন্স’ গ্রহণের পর লাইসেন্সে উল্লেখ করা শর্তাদি বা চাহিদা ভঙের ক্ষেত্রে এবং নির্ধারিত মানদণ্ডের চেয়ে নিম্নমানের বা অনিরাপদ সেবা দেয়ার কারণে বেবিচক প্রযোজ্য দণ্ড ও জরিমানা আরোপ ও লাইসেন্স বাতিল বা অপারেশন স্থগিত করতে পারবে।
বেসরকারি হেলিপোর্ট পরিচালনার উদ্দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হেলিপোর্ট পরিচালনাকারী হেলিপোর্টের সকল ব্যবস্থাপনা বেবিচকের চেয়ারম্যান ও বেবিচকের অনুমতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়মিত বা আকস্মিকভাবে পরিদর্শনের মাধ্যমে মনিটরিং করবে। আকস্মিক পরিদর্শনের পর পরিদর্শনকারী ব্যক্তি বা দলের দেয়া পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমাধানে হেলিপোর্ট অপারেটর বাধ্য থাকবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থতায় বেবিচক নির্ধারিত পদ্ধতিতে হেলিপোর্ট অপারেটরকে প্রযোজ্য দণ্ড আরোপ করবে।
রুফটপ হেলিপ্যাড নীতিমালা
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে হেলিকপ্টার ব্যবহার বিগত বছরে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি সাধিত হলেও যানবাহনের আধিক্য ও সড়কপথে যানজটের কারণে বর্তমানে যোগাযোগ সময়সাধ্য হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মরণাপন্ন রোগীকে দ্রুত স্থানান্তর, জরুরি সেবা প্রদান, দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত সহায়তা প্রদান এবং ব্যবসায়িক কারণে দ্রুত যোগাযোগের জন্য হেলিকপ্টারের চলাচল এখন সময়ের গুরত্বপূর্ণ চাহিদা।
সাধারণত রুফটপ হেলিপ্যাড কোনো এলাকার সবচেয়ে উচু ভবনের ছাদে স্থাপন করা হয়। ছাদের ওপর অবস্থানের কারণে হেলিকপ্টারের উড্ডয়ন এবং অবতরণ পথ বেশ সহজ হয়। এছাড়া পাইলট সব সময় বাতাসের মুখোমুখি অবতরণের সুযোগ পান। সময়ের প্রয়োজনে হেলিকপ্টারের নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ নিশ্চিতে রুফটপ হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহৃত ভবনের সহনশীলতা নিশ্চিতকরণ, ভবনে যাত্রীদের প্রবেশ ও বহির্গমন সুসমন্বিতকরণ এবং কারিগরি এবং যান্ত্রিকভাবে হেলিকপ্টারের নিরাপদ চলাচলের জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রয়োজন। এ জন্য এ নীতিমালা করা হচ্ছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।
রুফটপ হেলিপ্যাড স্থাপনের শর্তের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, আবেদনকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীকে আবশ্যিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং কোনো ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারবেন না। আবেদেনকারীকে জমি, স্থাপনা ও অবকাঠামোর মালিক হতে হবে বা বৈধ মালিকের কাছ থেকে এটি পরিচালনার অনুমতি বা অনাপত্তি গ্রহণের দালিলিক প্রমাণ থাকতে হবে।
এছাড়া প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আবেদনে হেলিপ্যাড নির্মাণ এবং এটি পরিচালনা জন্য পর্যাপ্ত অর্থের সংকুলান বা পর্যাপ্ত অর্থের প্রাপ্তির উৎসের প্রমাণসহ বিস্তারিত বর্ণনা থাকতে হবে।
সংশ্লিষ্ট ভবনটি বাংলাদশে সরকারের প্রচলিত ইমারত নির্মাণ বিধি বিধান অনুসরণ করে নির্মিত হতে হবে এবং ভবনের ছাদের ভারবহন ক্ষমতা বাংলাদশের সর্বোচ্চ ভারী হেলিকপ্টার উড্ডয়ন বা অবতরণে সক্ষম হতে হবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।