ভারতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্তের পর থেকে গোটা দেশের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদরা কর্মবিরতি (ওয়াকআউট) করেছেন। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত চুপ থাকলেও অবশেষে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদাদানকারী ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলে মোদি সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মমতা। উদ্বেগ প্রকাশ করে কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতার নিয়ে বললেন, ‘ওরা কেউ জঙ্গি নন, গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের মুক্তি দেয়া উচিত।’
সোমবার ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় অমিত শাহ’র প্রস্তাবটি পাস হলেও এ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল দলীয় সাংসদরা।
রাজ্যসভার ওই অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন এবং শুখেন্দু শেখর রায়। ওয়াকআউট করায় অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রস্তাব ও এবং কাশ্মীরকে দুই ভাগ করতে ওঠা বিলে পক্ষে-বিপক্ষেও ভোট দেননি দলটির সাংসদরা। তবে এ নিয়ে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মমতা কোনো মন্তব্য করেননি।
চেন্নাই যাওয়ার পথে দমদম বিমানবন্দরে মমতা বলেন, ‘গতকাল থেকে যা ঘটছে, ভারতের বাকি নাগরিকদের মতো আমিও নজর রাখছিলাম। আমি বিশ্বাস করি কাশ্মীরের বাসিন্দারাও আমাদের ভাইবোন। আমি এই সিদ্ধান্তের বিষয়বস্তুর কথা বলছি না। কিন্তু পদ্ধতির সঙ্গে আমি একমত নই।’
মমতা আরও বলেন, ‘আমাদের দল কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই বিলকে সমর্থন করতে পারি না। আমরা ভোট প্রদান করি, কারণ তাতে সংসদে রেকর্ড হয়ে থাকবে। কারণ সাংবিধানিক, আইনগত এবং পদ্ধতিগত ভাবে এটা প্রশংসনীয় নয়। এটা গণতান্ত্রিক ভাবেও করা হয়নি।’
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে মমতা বলেন, তারা (কেন্দ্রীয় সরকার) সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারতো। সেখানে কাশ্মীরের প্রতিনিধিরাও থাকতো। তারা বৈঠক ডাকলে, আমরা তাতে যোগ দিতে প্রস্তুত ছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে সবাইকে সহমতে এনে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া যেত। কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। কিন্তু কখনও কখনও স্থায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল তাদের।