ছেলেধরা সন্দেহে সারাদেশে কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে উত্তেজিত জনতা। অনেককে পিটিয়ে আহত করেছে। এই আতঙ্কে সাতক্ষীরার ভিক্ষুকরা সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে ঘুরছেন। একই আতঙ্কে আছেন সাতক্ষীরার সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এমনকি অনেকে রাতে বারান্দায় ঘুমাতেও ভয় পাচ্ছেন।
সাতক্ষীরা শহরের রাজার বাগান এলাকায় ভিক্ষা করতে আসা মর্জিনা বেগম ও আয়েশা খাতুনের কাছে দেখা গেছে এনআইডি কার্ড। আয়েশা খাতুন বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা বলে পিটিয়ে মারা হচ্ছে। সে কারণে আমরা ভয়ে আছি। কখন ছেলেধরা বলে মারা শুরু করে। আগের তুলনায় কম বের হচ্ছি। পরিচিত এলাকার বাইরে ভিক্ষা করতে যাচ্ছি না। সঙ্গে আইডি কার্ড রাখছি। যাতে বিপদে পড়লে এটা দেখিয়ে বাঁচতে পারি।’
সাতক্ষীরা শহরের রাজার বাগান এলাকার গৃহিণী শাহনারা বেগম বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে মারা হচ্ছে। তাই গত কয়েকদিন ধরে ভিক্ষুকের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যারা ভিক্ষা করতে আসছেন, তাদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি আবার কারও কাছে স্মার্ট কার্ড দেখেছি।’
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের ফেসুবক পেজে সচেতনতামূলক পোস্ট দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গুজব ছড়াবেন না, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। এই পর্যন্ত গণপিটুনির ফলে যতগুলো নিহতের ঘটনা ঘটছে, তার প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে এবং জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। গুজব ছড়ানো ও গুজবে কান দেওয়া থেকে বিরত থাকতে এবং কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ইলতুৎমিশ বলেন, ‘ছেলেধরা গুজবের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে সভা করা হয়েছে। গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’
সৌজন্যে- বাংলা ট্রিবিউন