অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন ১৫৩ জন বিমানের যাত্রী। তাদের জীবন-মৃত্যুর ব্যবধান ছিল মাত্র ১০ মিনিট। ভারতের লখনউ বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণ করেছে ভিস্তারার একটি বিমান। বৈরি আবহাওয়ার কারণে একাধিক বিমানবন্দরে নামার চেষ্টা করায় আকাশে ঘুরে জ্বালানি শেষ হয়ে যায়। পরে লখনউয়ের আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলে জরুরি অবতরণ করে মুম্বাই থেকে দিল্লিগামী বিমানটি। সোমবারের ঘটনা হলেও আজ নজরে এসেছে সবার।
ভিস্তারা বিমান কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে সোমবার মুম্বাই থেকে দিল্লির উদ্দেশে যায় ভিস্তারা এয়ারলাইনসের এ-৩২০ বিমানটি। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় বিমানটি দিল্লিতে অবতরণ করেনি। পরে দিল্লি এটিসি থেকে বিমানটিকে পাঠিয়ে দেয়া হয় লখনউয়ে। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া একই থাকায় নামতে পারেনি। কোনো উপায় না দেখে কানপুর অথবা ইলাহাবাদের দিকে যেতে বলা হয় ভিস্তারার ওই বিমানটিকে।
কিন্তু ইলাহাবাদের দিকে যাওয়ার পথে লখনউ এটিসি থেকে ফের জানানো হয়, লখনউয়ের আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অবতরণে সমস্যা হবে না। তখন পাইলট লখনউয়ের দিকে ফিরে এসে অবতরণের অনুমতি চান এবং ‘জ্বালানি জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেন। শেষ পর্যন্ত এটিসির অনুমতি নেয়ার পর নিরাপদেই অবতরণ করে বিমানটি।
ইলাহাবাদ থেকে ফেরার পথেই ‘ফুয়েল মে-ডে’ (জ্বালানি জরুরি) ঘোষণা করেন পাইলট। বিমানের জ্বালানি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কম হলেই এটিসিতে এই বিপদ সঙ্কেত পাঠান পাইলট। সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। ভিস্তারার বিমানের পাইলট এই ‘ফুয়েল মে-ডে’ ঘোষণার পরই জরুরি অবতরণের অনুমতি দিয়ে দেয় লখনউ বিমানবন্দরের এটিসি।
কিন্তু কেন এমন জ্বালানি-শূন্য পরিস্থিতি তৈরি হলো? সাধারণত, মুম্বাই-দিল্লি বিমানযাত্রায় সময় লাগে ৫০ মিনিটের মতো। তার পরেও আরও এক ঘণ্টা উড়ার মতো জ্বালানি নিয়ে আকাশে উড়ে বিমানগুলো। এক্ষেত্রে দিল্লি থেকে প্রথমে লখনউ, সেখান থেকে ইলাহবাদের দিকে যাওয়া এবং আবার লখনউয়ে ফিরে আসার জেরে প্রায় এক ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় আকাশে উড়তে হয়েছিল বিমানটিকে। সেই কারণেই অতিরিক্ত জ্বালানিও প্রায় শেষ হয়ে যায়।
লখনউয়ে নামার পর মাত্র ৩০০ লিটারের মতো জ্বালানি ছিল। যার অর্থ প্রায় ১০ মিনিট বা তারও কম সময় আকাশে উড়তে পারত বিমানটি। বিশেষজ্ঞরা জানান, বোয়িং ৭৪৭-এর মতো বড় বিমানে প্রতি সেকেন্ডে এক গ্যালন বা প্রায় চার লিটারের মতো জ্বালানি পোড়ে। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ২৪০ লিটারের মতো।
তবে ভিস্তারার মতো মাঝারি গোত্রের বিমানের ক্ষেত্রে সেই জ্বালানি পোড়ার পরিমাণ বেশ কিছুটা কম। সেই হিসেবে যদি ২ সেকেন্ডে এক লিটার জ্বালানি পোড়ে, তা হলেও ৩০০ লিটারের হিসেবে আকাশে উড়ার মতো মাত্র ১০ মিনিট সময় ছিল।