Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ind-pakবিশ্বকাপ শেষ করে দেশে ফেরার সময় পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মেজাজটা নিশ্চয়ই বেশি খারাপ ছিল নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের ওপর। কারণ, কিউইদের সঙ্গে তাদের পয়েন্ট সমান হলেও রানরেটে পিছিয়ে থাকায় পাকিস্তানকে ধরতে হয় দেশে ফেরার বিমান আর নিউজিল্যান্ড প্রস্তুতি নেয় সেমিফাইনালের।

সেই পাকিস্তানিরাই বুধবার হয়ে গিয়েছিল পুরোপুরি নিউজিল্যান্ডের সমর্থক। না, দেশটিকে ভালোবেসে নয়- তারা নিউজিল্যান্ডের সমর্থক হয়েছিল সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ভারত ছিল বলে। সেমিফাইনালে উঠতে না পারায় অনেক ভারতীয় সমর্থকের খোঁচা সহ্য করেছিলেন পাকিস্তানিরা। ভারতের বিদায়ের পর উৎসব করে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়েছেন পাকিস্তানিরা।

chardike-ad

ওল্ড ট্রাফোর্ডে দুই দিনের সেমিফাইনাল দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। মঙ্গলবার এক ইনিংস শেষ না হতেই খেলা থামিয়ে দিয়েছিল বৃষ্টি। রিজার্ভ ডে থাকায় বুধবার হলো ম্যাচের বাকি অংশ। সেই সেমিফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে নাটকীয় জয়ই পেয়েছে গতবারের রানার্সআপরা।

দরকার ২৪০ রান। এটা কোনো লক্ষ্য হলো ভারতের? অনেকেরই ধারণা ছিল রোহিত-কোহলির রানও করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। কিন্তু ক্রিকেট ম্যাচের গতি কখন কোন দিকে যায় তা সাধারণত বলা যায় না। তবে প্রথম এই সেমিফাইনালে ভারতীয় ইনিংস শুরুর পরপরই একটা আন্দাজ করা গিয়েছিল যে দিনটা ভারতের নয়। ২৪ রানেই সাজঘরে ফেরত গেলেন রোহিত, কোহলি, রাহুল ও দিনেশ কার্তিকরা। ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপে তখন শুধু নিজেদের ছায়া।

ভারতের ইনিংস শুরুর ওই বিপর্যয়ের পরই পাকিস্তানি সমর্থকদের মধ্যে উল্লাস শুরু হয়। নানা মন্তব্য লিখে টুইট করতে থাকেন পাকিস্তানিরা। শেষ পর্যন্ত তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। পাকিস্তানিরা দিতে পারবেন ভারতের বিদায় দেখার পর একটা আনন্দ ঘুম।

দলীয় শতরান পূরণ হওয়ার আগেই ৬ উইকেট। সেখান থেকে ভারতকে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা ও মহেন্দ্র সিং ধোনির অসাধারণ এক পার্টনারশিপ। নিউজিল্যান্ডের জার্সি গায়ে আর পতাকা মাথায় পেঁচিয়ে দলটিকে সমর্থন জানানো পাকিস্তানীরা হয়তো আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। এরপর হঠাই সবকিছু পাল্টে যায় ভোজবাজির মতো। জাদেজার আউটের পরই নিভুনিভু হয়ে যায় ভারতের আশা। রানের চাকার গতি বাড়াতে গিয়ে ধোনি রান আউট হওয়ার পর আবার টুইটে সরব হয়ে ওঠে পাকিস্তানী সমর্থকরা।

ড্রেসিং রুমের দিকে তাকিয়ে থাকা বিরাট কোহলির ছবি পোস্ট করে একজন টুইটে লিখেছেন, ‘বিরাট কোহলি ড্রেসিং রুমে ব্যাটসম্যান খুঁজছেন।’

আইসিসিই একটি ছবি পোস্ট করেছে এক পাকিস্তানি সমর্থকের। যেখানে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ওই পাকিস্তানি সমর্থক ধরে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের পতাকা। হ্যাশ ট্যাগ #WeHaveWeWilliamson।

র‌্যান্টিং পাকিস্তানি নামে একটি টুইটে পাকিস্তানি সমর্থকদের প্রতিক্রিয়ার একটি কাল্পনিক মন্তব্য জুড়ে দেয়া হয়। লেখা হয়, ‘পাকিস্তানি সমর্থক, ধোনি চেষ্টা করলেন ২ রান নিতে এবং হিট করলেন বাউন্ডারি। আজ তো বড়া চেজ কি কোসিস কর রাহা হে।’

সুমাইল নামে একজন লিখেছেন, ‘ভারত তো এখন আনুশকা শর্মাকেই দোষোরোপ করবে। তাই নয় কি?’ পাকিস্তানি এক সমর্থক আবার ক্রিকইনফোর ম্যাচ লাইভ কমেন্টারির একটা জোকসকে মার্ক করে শেয়ার করেছেন। কমেন্টারিতে ভারতের ১৩তম ওভারের সময় লেখা হয়েছে, ‘যদি নিউজিল্যান্ড আর ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে পৌঁছায়, তাহলে এই দুই দলকেই তো হারিয়েছে পাকিস্তান। সুতরাং, গাণিতিক সূত্রমতে তো তাহলে পাকিস্তানই এই বিশ্বকাপের আসল চ্যাম্পিয়ন!’

ট্রেন্ডুলকার নামে এক টুইট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘কোন সেই অপদার্থ যে টিম ইন্ডিয়াকে বার্গার আর পিৎজা সরবরাহ করেছে?’

মেমেস অব পাকিস্তান নামে এক টুইট ব্যবহারকারী ফটোশপে ইমরান খানের ছবির ওপর কেন উইলিয়ামসনের মাথা বসিয়ে পাশে পাকিস্তানি পতাকার ওপর নিউজিল্যান্ডের পতাকা বসিয়ে দিয়েছেন। সেখানে লিখেছেন, ‘মেরে আজিজ হিন্দুস্তানিও। হো রাহি হেয় না চিন্তা থা চিতা চিতা চিতা চিন্তা থা থা…।’

এভাবে নানা কার্টুন ও মন্তব্য দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে থাকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া পাকিস্তানীরা।