Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

eng-indiaবার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের ৩৩৭ রানের বিশাল স্কোরের নিচে চাপা পড়ে শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী ভারত হেরে গেছে ৩১ রানের বড় ব্যবধানে। ভারতের এই হারে লাভ হয়েছে কেবল ইংল্যান্ডেরই। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হলো উপমহাদেশের তিন দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার। লঙ্কানদের তো সেমির স্বপ্ন শেষই হয়ে গেছে বলা যায়।

কিন্তু বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের সেমিতে ওঠার যে স্বপ্ন, তা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেলো ইংল্যান্ডের এই জয়ে। ৮ ম্যাচ শেষে ইংলিশদের অর্জন ১০ পয়েন্ট। পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে আবারও তারা উঠে এলো ৪ নম্বরে। অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ৬ নম্বরে বাংলাদেশ, ৮ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ৫ নম্বরে পাকিস্তান। ১১ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে ভারত আর নিউজিল্যান্ড রয়েছে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে।

chardike-ad

কাগজে-কলমে এখনও বাংলাদেশের সেমির আশা শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু ভারতের এই হারে অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়েছে। যে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে গত ২৭টি বছর ভারতকে হারাতে পারে না, তারাই কি না আজ গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচটিতে কোহলিদের বলতে গেলে উড়িয়ে দিয়েছে।

englandকিন্তু ভারতের হারের ধরণ দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের প্রশ্ন, ভারত কি তবে ইচ্ছা করেই হেরেছে? তাদের ব্যাটিং স্টাইল এবং জিততে না চাওয়ার মানসিকতার কারণেই মূলতঃ এই প্রশ্ন তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা।

ইংল্যান্ডের করা ৩৩৭ রানের জবাবে ভারত থেকে ৩০৬ রানে। শেষ ১০ ওভারে ভারতের রান তোলার হার দেখে, হার্দিক পান্ডিয়া, মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা কেদার যাদবদের মধ্যে জয়ের কোনো মনসিকতা না দেখেই ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের ইচ্ছে করে হারের আলোচনাটা উঠে এসেছে।

নেটিজেনদের ভাষ্য, বাংলাদেশকে ঠেকানোর জন্যই এই কাণ্ডটা ঘটিয়েছে ভারত। তাদের সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত। সামনে বাকি থাকা দুই ম্যাচ তাদের জন্য সহজই। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এর মধ্যে একটি জিতলেই সেমি নিশ্চিত। সে কারণে স্বাগতিক প্লাস তিন মোড়লের এক দেশ ইংল্যান্ডকেও তারা টেনে তুলে নিলো উপরে। এটা কৌশল করেই করেছে ভারত। না হয়, শেষের দিকে ভারত কখনোই এতটা স্লো ব্যাটিং করেনি।

fb-stফারদিন খান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভারতের মাইন্ড গেমটা বুঝতে মনে হয় না কারো কোন সমস্যা হচ্ছে। তাদের মেন্টাল সেটাপ যেভাবেই হোক বিগ থ্রি-কে সেমিফাইনালে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান, বাংলাদেশ বাদ পড়বে। সে ক্ষেত্রে ভারত আরো দুইটি ম্যাচ পাবে। তাদের যে কোন একটি জিতলেই তারা সহজেই সেমিতে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে তারা নিউজিল্যান্ড কে সেমিতে পাবে। এশিয়ার যেকোন টিম থেকে নিউজিল্যান্ড সেমিতে সহজ প্রতিপক্ষ। আর বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের সাথে ভারতের ক্রিকেটিয়, রাজনৈতিক সম্পর্ক সবারি জানা। বিশেষ করে পাকিস্তানের জন্য অনেক বড় সুযোগ ছিল এবার। এখন অনেকে ভাবতেই পারেন যে ভারত চেষ্টা করছে। আদৌ কি করছে? শেষ ৫/৭ ওভারে ধোনি পান্ডিয়ার মত মারকুটে ব্যাটসম্যানরা কোন শটই অফার করেনি। হাউ ফানি। এমন নির্লজ্জতা কেমনে দেখাতে পারে! তারা প্রমাণ করল “An India always remains india”। এনআই মিঠু নামের একজন বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্ত লিখেছেন, ‘ম্যাচটা জেতার কোন চেষ্টায় করেনি ভারত। ম্যাচের এই অবস্থায় ধোনিকে এমন নির্লিপ্ত ব্যাটিং কখনো করতে দেখি নাই।’

fb-stমইনুল হাসান টিপু নামে একজন লিখেছেন, ‘বুঝলাম না ইন্ডিয়া এমন করলো কেন? জেতার জন্য তাদের সে ইন্টেন্ট কিংবা আর্জেন্সি দেখা যায়নি। শেষদিকে যেভাবে সিঙ্গেল নিচ্ছিলো এর কোন ব্যাখ্যা নাই আসলে। একেবারে অদ্ভুত ব্যাটিং! ইন্ডিয়া আজ হারাতে কমফোর্ট জোনে থাকবে না। হয়তো তারা দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় হয়ে সেমিফাইনালে যাবে। ইংল্যান্ড যদি সেমিফাইনালে উঠে পুনরায় ইন্ডিয়ার সাথে দেখা হতে পারে। ইংল্যান্ড অবশ্যই আজ জেতাতে ওদের সাথে এগিয়ে থাকবে। অন্যদিকে আরেকটা পজেটিভ দিকও আছে। ইন্ডিয়া আজ হারাতে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে থাকবে, তারা এখনও অফিসিয়ালি কোয়ালিফাই করে নাই। আর শেষদিকের মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য সমালোচিতও হবে। ইন্ডিয়া এক ম্যাচ হারলেও ওদের মিডিয়া, দর্শকরা প্রচুর চাপ তৈরি করে। এখানে বাংলাদেশের এডভান্টেজ। কয়েকদিনের বিরতিতে একদম চাঙ্গা হয়ে আছে টাইগাররা, যারা ক্লান্ত ইন্ডিয়াকে পাবে। ইন্ডিয়াকে হারানো যাবে। তবে বুমরা সবচেয়ে বড় থ্রেট। যদি কিন্তুর সমীকরণ না ভেবে ইন্ডিয়ার বিপক্ষে ভালো প্ল্যান নিয়ে মাঠে নামতে হবে।’

fb-stকেউ কেউ তো ভারত পাতানো খেলা খেলেছে বলেও দাবি করছেন। রবিউল ইসলাম রবি নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘এই প্রথম কোন একটি ম্যাচকে আমার কাছে পাতানো মনে হলো!! We don’t eat grass।’

মুমতাজুল করিম নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাবেক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘পাতানো খেলায় ইন্ডিয়া ইচ্ছা করে হারছে। ধোনির ব্যাটে বল লাগে না। হারছে তারপরও ইন্ডিয়ার দর্শকরা নাচছে।’

পলাশ সরকার নামে একজন লিখেছেন, ‘আহারে! কষ্ট লাগে তাদের জন্য যারা ক্রিকেটকে ভদ্রলোকীয় খেলা মনে করে, যারা ক্রিকেটারদের দেবতা মনে করে!!! আজকের ইংল্যান্ড ও ইন্ডিয়ার ম্যাচের পর নিশ্চয়ই তাদের চোখের ব্যান্ডেজ খুলে যাবে। তারা এখন থেকে এই খেলাটিকে অন্যসব খেলার মতো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটা ইভেন্ট ভাববেন। দেশপ্রেম বা জাতীয়তার যে ভেল্কি ক্রিকেটকে জড়িয়ে দেখানো সেখানেও রয়েছে পুঁজি আর ব্যবসা।’