মিসরের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি সোমবার আদালতে বিচার চলাকালেই মৃত্যুর কোলো ঢলে পড়েন। দেশটির একনায়ক সরকার এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক দাবি করলেও আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি উঠেছে।
এই মৃত্যু বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মিসরের সামরিক শাসক আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেছে। তিনিই গত ছয়টি বছর মুরসিকে নির্জন কারাবাসে বন্দি করে রেখেছিলেন।
মুরসির মৃত্যুর পর তার স্ত্রী লাগলা মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস লিখেছেন। এতে স্বামীকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করে তার (মুরসি) সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
ফেসবুকে মুরসির স্ত্রীর লেখা স্ট্যাটাসটি হুবহু অনুবাদ করে নিচে দেয়া হয়েছে-
‘মিসর প্রজাতন্ত্রের বৈধ প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ মুরসি আল্লাহর জন্য শহীদ হয়েছেন। কারাকক্ষে তিনি বিজয়ী হিসেবে শিরদাঁড়া সোজা রেখে মর্যাদার সঙ্গে জুলুমের প্রতিবাদ করে তিনি বেছে নিয়েছেন শাহাদাতকে।
বহুলোক তার বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও দেশকে এগিয়ে নিতে গিয়ে তিনি মারা যান। সত্য প্রচারের জন্য সামনে এগিয়ে গেছেন, কখনো পিছু হটেননি, যে জন্য তার মৃত্যু হয়েছে। কোনো রকম বিরক্তি, ক্লান্তি, আত্মসমর্পণ ও বশ্যতাস্বীকার ছাড়াই তিনি সত্যের তরবারি খাপখোলা রেখেছেন।
কাজেই আল্লাহ তাকে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। ভীরুতা, বিশ্বাসঘাতকতা ও মোনাফেকির যুগ থেকে আল্লাহ তাকে দূরে নিয়ে গেছেন। আল্লাহ তাকে নিজের কাছে নিয়েছেন, যাতে তিনি ইয়াহইয়া, ঈসা; আসহাবে উখদুদ ও হাবিব আল নাজ্জারদের মতোই একই পরিস্থিতিতে যোগ দিতে পারেন। তার বাণী প্রচার ও দায়িত্ব বণ্টনের পর জান্নাতুল ফিরদাউস, উচ্চমর্যাদা ও সাহচর্যের জন্য আল্লাহ তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।
অপেক্ষা কর, বিশ্বাসঘাতকদের বিজেতারা, অসীম অন্ধকার তোমাদের ঢেকে ফেলবে এবং নেমে আসবে কঠিন শাস্তি। আগামীতে বহু প্রজন্মের জন্য তোমরা শিক্ষা হয়ে থাকবে। জান্নাতে, হে শহীদ। কী লাভজনক লেনদেন, হে শহীদ।’