Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

tangail-mosqueটাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় বিদেশি অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ নিজেদের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন ছালাম নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ও তার প্রবাসী ভাই। এতে ওই মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চর বকশিয়া গ্রামের ছালাম হোসেন ও তার ভাই কুয়েত প্রবাসী বেলাল হোসেন মসজিদের মালিকানা দাবি করছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চর বকশিয়া জামে মসজিদের দরজায় তালা ঝুলানো। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের কক্ষে তালা দেয়া। একাধিক ব্যক্তির কাছে খোঁজ নিয়েও ইমাম-মুয়াজ্জিনকে পাওয়া যায়নি।

chardike-ad

জানা যায়, তালা দেয়ায় ওই মসজিদে মুসল্লিদের নামাজ পড়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিকার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় গ্রামবাসী। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো সমাধান না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গ্রামবাসী জানান, উপজেলার চর বকশিয়া গ্রামে কুয়েতের অর্থায়নে ২০১৫ সালে চর বকশিয়া জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে গ্রামের মুসল্লিরা এ মসজিদে নামাজ আদায় করতেন।

এরই মধ্যে দুবাই প্রবাসী বেলাল হোসেন মসজিদটিতে কিছু টাকা অনুদান দেন। কিছুদিন পর বেলাল হোসেন ও তার ভাই ছালাম মসজিদটি নিজেদের বলে দাবি করেন। বেলাল বর্তমানে দুবাই থাকলেও তার পরামর্শে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেন তার ভাই ছালাম।

পরে মসজিদ নিজেদের দখলে নিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে কাউকে কিছু না জানিয়ে মসজিদের ইমামকে তাড়িয়ে দিয়ে নতুন ইমাম রাখেন দুই ভাই। এরপর থেকে নিজেদের ইচ্ছামতো মসজিদ পরিচালনা করছেন তারা। স্থানীয়রা মসজিদে না গেলে ছালাম ও ইমাম দুজনে মসজিদের তালা খুলে নামাজ আদায় করেন।

চর বকশিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিন, নুরুল ইসলামসহ গ্রামবাসী জানান, নিজেদের দাবি করে গ্রামের মুসল্লিরা যাতে নামাজ পড়তে না পারেন সেজন্য দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে তালা দিয়ে রেখেছেন ছালাম ও তার ভাই। ফলে মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন না গ্রামের মুসল্লিরা। প্রতিকার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জায়গায় লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো কাজ হয়নি।

চর বকশিয়া জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়াই নিজেদের দাবি করে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে তারা দুই ভাই। ছালাম ও কুয়েত প্রবাসী বেলালের পৈতৃক জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদে তালা দেয়ার কারণ এবং ইমামকে তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে মসজিদ নিজেদের দাবি করেন তারা। গ্রামের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।

মসজিদের মালিকানা দাবিদার ও তালা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ছালাম হোসেন বলেন, শুধু নামাজের সময় তালা খুলে দেয়া হয়। সড়কের সঙ্গে মসজিদ হওয়ায় চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। নামাজের আগে ইমাম এসে তালা খুলে আজান দেন। শুধু বিদেশি অর্থে মসজিদ নির্মাণ হয়নি, আমার ভাই বেলাল হোসেন বিপুল টাকা অনুদান দিয়েছেন এই মসজিদ নির্মাণের জন্য। ওই অনুদানে মসজিদ নির্মাণ হওয়ায় মালিকানা দাবি করছি আমরা।

এ বিষয়ে উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ হোসেন বলেন, মসজিদে তালা দেয়ার ঘটনায় লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। পারিবারিক কারণে ভাই ভাইকে মসজিদে যেতে দেয় না। তাদের ভাইদের কারণে এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিলে ভালো হয়।

জানতে চাইলে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগটি এখনো আমি পাইনি। তবে আল্লাহর ঘর মসজিদে তালা দেয়ার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ