চলতি বিশ্বকাপে উপমহাদেশের দলগুলো এখন পর্যন্ত ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেনি। বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশ কেমন করবে, সেটি নিয়েও টাইগার ভক্ত-সমর্থকদের মনে ছিল উদ্বেগ। তবে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমের জোড়া হাফসেঞ্চুরি আর শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের হিমালয়সম সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে টাইগাররা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা করে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার। প্রোটিয়া বোলিং লাইনআপকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন তারা।
সাতের ওপর রান তুলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন এই যুগল। শেষ পর্যন্ত নবম ওভারে বোলিং পরিবর্তন করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস, বল তুলে দেন আন্দেলু ফেহলুখায়োর হাতে।
ফেহলুখায়ো অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দেন প্রথম ওভারেই। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তামিমকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান এই পেসার। ২৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৪ রান করে আউট হন তামিম। তামিম-সৌম্যর উদ্বোধনী জুটিটি ছিল ৬০ রানের। এ নিয়ে টানা পঞ্চম ম্যাচে ওপেনিংয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়ে বাংলাদেশ।
আজকের (রোববার) ঝড়ো ওপেনিং জুটিতে সৌম্যর অবদানই বেশি। ৬০ রানের মধ্যে ৪৬ রানই এসেছে তার ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত বিধ্বংসী সৌম্যকেও বাউন্সারে পরাস্ত করে প্রোটিয়ারা। ক্রিস মরিসের বলটি গ্লাভসের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের হাতে। ৩০ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৪২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন সৌম্য।
৭৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিয়েছেন সাকিব-মুশফিক। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪১ বলে তারা গড়েন ১৪২ রানের দুর্দান্ত এক জুটি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যেটি বাংলাদেশের সেরা জুটির রেকর্ড।
দলীয় ২১৭ রানের মাথায় সাকিবকে বোল্ড করেন ইমরান তাহির। ৮৪ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৭৫ রান করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বড় এই জুটি ভাঙার পর ২১ বলে ২১ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে তাহিরেরই বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন।
এরপর কাটায় কাটায় দলের ২৫০ রান হওয়ার পর মুশফিকও আউট হন। ৮০ বলে ৮ বাউন্ডারিতে টাইগার উইকেটরক্ষক করেন ৭৮ রান। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ আর মোসাদ্দেক হোসেনের ৪১ বলে ৬৬ রানের ঝড়ো জুটি।
৪৯তম ওভারের শেষ বলে ২০ বলে ২৬ রান করে আউট হন মোসাদ্দেক। তবে পরের সময়টায় ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৪৬ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আন্দেলো ফেহলুখায়ো, ইমরান তাহির আর ক্রিস মরিস।