ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কার্যক্রম জঙ্গিদের কাজের মতো মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর। বুধবার (২৯ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর কেন্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত রোববার (২৬ মে) বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে বগুড়ায় এক ইফতার মাহফিলে অংশ নিতে গেলে নুরের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, তারই প্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
ডাকসু ভিপি বলেন, আমরা জানি ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। অথচ পবিত্র রমজানে হামলা করে প্রমাণ করছে যে তারা সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে।
তিনি বলেন, কিছু দিন আগেও তারা বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ধরনের কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
নুর বলেন, আপনারা দেখেছেন গত ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইফতার মাহফিল ছিল। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে ইফতার মাহফিল প্রতিহত করা হয়। তখন আমরা রাস্তার পাশে বসে ইফতার করেছি। পরের দিন বগুড়ায় আমাদের ইফতার মাহফিল ছিল।
তিনি বলেন, সেখানে যাওয়ার আগে আমি থানা পুলিশকে জানিয়েছিলাম নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কিছুটা শঙ্কিত। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয় আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা দিতে পারবে না। এরপর জেলার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে আমাদেরকে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। অথচ তারা আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা সেখানে জেলা গ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছালে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে হামলা হয়। তারা জঙ্গিদের মতো আমাদের ওপর হামলা করে। এক পর্যায়ে আমি পড়ে গেলে আমার সঙ্গে থাকা রাতুলসহ অন্যান্যদের রড দিয়ে পিটায় এবং আমার পায়ে ইট দিয়ে আঘাত করে।
নুর বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনাও আমরা ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মুঠোফোনে জানালে তারা বলেছিলেন ব্যবস্থা নেবেন। অথচ পরের দিন বগুড়ায়ও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এটি স্বাভাবিক কোনো বিষয় না। মনে হচ্ছে পরিকল্পিত, আমাকে হত্যার উদ্দেশে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে হামলাগুলো করানো হচ্ছে।
ডাকসু সহ-সভাপতি বলেন, ছাত্রলীগ এখন নিজেরা মারামারি করার পর বলে হালকা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। তারা হামলা করে দায়সারা বক্তব্য দিচ্ছে।
ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অফার পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পক্ষ থেকে আমাকে এক নম্বর সহ-সভাপতি অথবা এক নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার অফার দেয়া হয়েছিল। তারা বলেছে ছাত্রলীগ করলে আমাকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।
নুর বলেন, তাদের সঙ্গে যাইনি বলে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার ওপর হামলা চালাচ্ছে। আমি জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন যারা ছাত্রলীগের নামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে তিনি যেন তাদের বিচারের আওতায় আনেন।