নানামুখী অপপ্রচার ও সামাজিক সংকটের মধ্যে কোরীয় মুসলিমদের উজ্জীবিত করতে, অমুসলিমদের মধ্যে ইসলামের প্রচার এবং সমাজের ভুল ধারণা ভেঙে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কোরীয় মুসলিম তরুণরা। আর এই কাজে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করছে। ইসলামের প্রচার-প্রসারে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ব্যবহার করছে।
সামাজিক মাধ্যমে সরব কোরীয় তরুণদের একজন পার্ক ডংশিন। তিনি ২০০৯ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। বর্তমানে পার্ক ডংশিন দুটি ইউটিউব চ্যানেল চালান। একটি আরবি ভাষা শিক্ষাসংক্রান্ত এবং অন্যটি ইসলামের অন্যান্য বিষয়সংক্রান্ত। দুটি চ্যানেলে যথাক্রমে ১০ হাজার ও ৫০ হাজার সক্রিয় ভিউয়ার রয়েছে। ফেসবুকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা দুই লাখ।
সামাজিক মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১১ সালে আমি ইউটিউব চ্যানেল চালু করি ইসলাম সম্পর্কে মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মানুষ সাড়া দিতে শুরু করেছে। অনেক ভিউয়ার ইসলাম অবমাননা করে পোস্টে মন্তব্য করে। কিন্তু আমি বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করি। কারণ কোরীয় সমাজে ইসলাম একটি নতুন সংস্কৃতি, যা সমাজের সঙ্গে ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে। একটি নতুন সংস্কৃতি ও ধর্ম সম্পর্কে জানার প্রক্রিয়াটাই এমন।তিনি আরো বলেন, ‘আমি খুব বিস্মিত হই যে বহুসংখ্যক খ্রিস্টান ইসলাম সম্পর্কে জানতে আমার চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।’
ইসলাম গ্রহণের পর পার্ক সৌদি আরবের মদিনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে আরবি ভাষা ও মুসলিম ধর্মতত্ত্ব নিয়ে লেখাপড়া করেন এবং শরিয়াহ আইন নিয়ে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
সাফিয়া কাং না-ইয়ন ২০১৫ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদের নারী ম্যানেজার। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ৫০ হাজার। এই অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করে তিনি ইসলামী খাবার, ফ্যাশন ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন বিষয়ের প্রচার করেন। একই সঙ্গে তিনি ইসলামের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ কোরীয় সংস্কৃতিগুলোও তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, ‘এটি কোরীয় ও মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধের কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘কোরিয়ায় ইসলাম পালন করা কঠিন। তবে এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আমি আমার ধর্মবিশ্বাস নিয়ে গর্বিত। কারণ আমি ইসলামেই শান্তি খুঁজে পেয়েছি।’
এভাবেই কোরীয় তরুণরা সামাজিক মাধ্যমে নানা আঙ্গিকে ইসলামকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে।
তথ্যসূত্র: আরব নিউজ