সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুরু হওয়া বিরোধের জের ধরে শ্রীলঙ্কার পূর্ব উপকূলীয় শহর চিলাউয়ের কয়েকটি মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন দোকানে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় এক ব্যক্তিকে মারধরও করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শুরু হওয়া বিরোধের জের ধরে রবিবার এই হামলা চালানো হয়েছে।
লঙ্কান পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকেরা জানান, উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চিলাউ পুলিশ এলাকায় আগামীকাল ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। পরে পুলিশ জানিয়েছে, কারফিউ ভোর ৪টায় প্রত্যাহার করা হবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক ফেসবুক পোস্টের লেখককে তারা গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম আব্দুল হামিদ মোহাম্মদ হাসমার। খ্রিস্টান অধ্যুষিত শহরটির বাসিন্দারা জানান, হাসমারের পোস্ট ছিল ভয় প্রদর্শনকারী এবং ক্ষুব্ধ জনতা তাকে পিটুনি দিয়েছে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক মুসলিম বাসিন্দা জানান, এরপর উত্তেজিত বেশ কয়েকজন মানুষ তিনটি মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন দোকানে পাথর নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও রাতে আমরা আতঙ্কে থাকব।
তিন সপ্তাহ আগে দেশটিতে সিরিজ বোমা হামলায় আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন। ইসলামি চরমপন্থী আত্মঘাতী জঙ্গিরা এই হামলা চালায়। ওই হামলার পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য হয়রানি ও হুমকির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মুসলিমরা।
ওই বাসিন্দা আরও জানান, একটি মসজিদ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন যুবক চিৎকার করে একটি কাপড়ের দোকানে পাথর নিক্ষেপ করছে। দোকানটির মালিক হাসমার বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শ্রীলঙ্কার কয়েকটি সম্প্রদায়ের মানুষের আশঙ্কা সরকার ক্রমবর্ধমান ইসলামি হামলা ঠেকাতে সম্ভাব্য সব জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কয়েকদিন আগে ট্রাফিক নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই হামলার পর সরকার সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু এবার তা করেনি।