কোনোভাবেই থামছে না দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিদের মৃত্যুর মিছিল। প্রতিদিনই দেশটির কোনো না কোনো অঞ্চলে শোনা যায় স্বজন হারানোদের কান্নার রোল। রমজানের প্রথম দিন থেকে গত চারদিনে ৪ বাংলাদেশি খুন হয়েছে আফ্রিকান সন্ত্রাসীদের হামলায়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের অনেক দেশের অভিবাসী বাস করেন। দেশটির সরকারি তথ্যমতে ২০১৬ সালেই অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ২০ লাখেও বেশি। যারা নানা সময়ে ভাগ্যের অন্বেষণে সেখানে গিয়েছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন
৯ মে ২০১৯ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে ফেলিকনপার্ক এলাকায় ইমন হোসেন নামে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর দোকানে আফ্রিকান সন্ত্রাসীরা ডাকাতির উদ্দেশ্যে হামলা করে এবং যাওয়ার সময় ইমনকে গুলি করে হত্যা করে। তিনি গত তিন বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসেন এবং কিছুদিন চাকরি করার পর কেপটাউন শহরের এক আত্মীয়ের সযোগিতায় ফেলিকনপার্ক এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছিলেন।
৮ মে বুধবার নিউক্যাসেল শহরে জয়নাল আবেদীন (৩০) নামে এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে একদল আফ্রিকান ডাকাত ডাকাতি করতে এসে চলে যাওয়ার সময় তার মাথায় গুলি করে তকে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে ফোন দেয়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এসে জয়নালের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত জয়নাল আবেদীন এইচএসসি পাশ করে দশ বছর আগে জয়নাল আবেদীন দক্ষিণ আফ্রিকা আসেন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার নিউক্যাসেল শহরে নিজের দোকান পরিচালনা করতেন। দোকানের পাশেই একটি কন্টেইনারে থাকতেন তিনি।
৭ মে দক্ষিণ আফ্রিকার পোর্ট এলিজাবেথ মো. শাহজাহান নামে একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আফ্রিকান সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছে। সকালে কাস্টমার সেজে এক আফ্রিকান মো. শাহজাহানের দোকানে ‘পাই’ কিনতে আসে, এ সময় মো. শাহজাহান দোকান থেকে বাহিরে বের হচ্ছিলেন। সে সময় ওই আফ্রিকান পেছন থেকে শাহজাহানের মাথায় ও গাড়ে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এ ছাড়া গত রোববার দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও এক বাংলাদেশি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন। দেশটির জোহানেসবার্গে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির নাম সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।
জোহানেসবার্গ শহরের স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সিরাজুল ইসলাম মোল্লা মাদারীপুর জেলার সন্ন্যাসীর চর গ্রামের হাজী নুর উদ্দিনের ছেলে।
প্রতিদিনই এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর সারি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা পাচ্ছে না কোনো বিচার বা সহায়তা। সব সময়ই অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায় চোখের সামনে। আনা হচ্ছে না বিচারের আওতায় করা হচ্ছে না কোনো মামলা।
আফ্রিকায় বাংলাদেশ কমিউনিটির তেমন কোনো সক্রিয়তা কিংবা এসব মৃত্যুর ঘটনায় শাস্তি না হয় দিনে এমন খুনের ঘটনা বেড়েই চলেছে।অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনার কোনো প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অভিযোগ তুলেছে।
সৌজন্যে- জাগো নিউজ