ম্যাচ হারলে সুযোগ থাকবে আরও একটি, তবে জিতলে নিশ্চিত ফাইনালের টিকিট- এমন সমীকরণের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২৮ রানের! নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে কখনো এত বড় লক্ষ্য তারা করে জেতেনি তারা। ফলে ফাইনালের টিকিট পেতে হলে গড়তে হতো রেকর্ড।
আর এ রেকর্ডের জন্য এগিয়ে আসতে হতো টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানদের। ঠিক সেই কাজটিই করেছেন ওপেনার সুনিল অ্যামব্রিস। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে করেছেন ১৪৮ রান, দলকে এনে দিয়েছেন ৫ উইকেটের জয়। তাও কিনা ১৩ বল হাতে রেখেই। আয়ারল্যান্ডের করা ৩২৭ রানের জবাবে ৪৭.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এ জয়ে ৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ তারিখের ফাইনালে নিজেদের টিকিট নিশ্চিত করেছে ক্যারিবীয়রা। কারণ সমান ম্যাচ খেলে আইরিশদের সংগ্রহ ২ পয়েন্ট। ফলে স্বাগতিকরা বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে বোনাসসহ জিতলেও সাতের বেশি হবে না তাদের পয়েন্ট। তাই এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
৩২৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ার ম্যাচে ক্যারিবীয়দের অন্যতম ভরসার পাত্র ছিলেন আগের দুই ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা শাই হোপ। কিন্তু এ ম্যাচে হতাশ করেন তিনি। আশা জাগিয়েও ব্যর্থ হন বড় ইনিংস খেলতে। সুনিল অ্যামব্রিসের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৪ রান যোগ করে তিনি আউট হন ৩০ রানে।
দ্বিতীয় উইকেটে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ ড্যারেন ব্রাভোও। দলীয় ১১২ রানের মাথায় তিনি ফেরেন ১৭ রান করে। তবে তৃতীয় উইকেটে রস্টোন চেজকে যোগ্য সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান অ্যামব্রিস। একপ্রান্তে চেজ নির্ভরতা দেয়ায় অপরপ্রান্তে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন এ ম্যাচেই প্রথমবারের মতো ফিফটির দেখা পাওয়া অ্যামব্রিস।
চেজের সঙ্গে ১২৮ রানের জুটি গড়ার পথে মাত্র ৮৯ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন অ্যামব্রিস। দলীয় ২৪০ রানের মাথায় ৪৬ রান করে আউট হন চেজ। এর খানিক পর ইনিংসের ৪০তম ওভারের শেষ বলে থামেন অ্যামব্রিসও। তবে আউট হওয়ার আগে ১৯ চার ও ১ ছক্কার মারে ১২৬ বলে ১৪৮ রান করেন তিনি।
অ্যামব্রিস আউট হওয়ার পরেও জয়ের জন্য ১০ ওভারে ৭৬ রান দরকার ছিলো ক্যারিবীয়দের। জোনাথান কার্টারকে সঙ্গে নিয়ে সে দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। দুজন মিলে মাত্র ৪৬ বলে যোগ করেন ৭৫ রান। দুই দলের স্কোর সমান হওয়ার পর ২৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হন হোল্ডার। তবে ২৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন কার্টার।
এর আগে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জেতেন আইরিশ দলপতি উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শুরুটা অবশ্য তেমন ভালো ছিল না। ১৯ রানের মাথায় ওপেনার জেমস ম্যাককলাম ফিরেন শেলডন কট্রেলের (৫) শিকার হয়ে।
তবে দ্বিতীয় উইকেটেই দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন পল স্টার্লিং আর বালবির্নি। এই উইকেটে তারা যোগ করেন ১৪৫ রান। ৭৭ রান করা স্টার্লিংকে ফিরিয়ে এই জুটিটি ভাঙেন শেনন গ্যাব্রিয়েল। পরের ওভারে এসে উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডকেও (৩) সাজঘরের পথ দেখান এই পেসার।
এদিকে একটা প্রান্ত ধরে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন বালবির্নি। চতুর্থ উইকেটে কেভিন ও’ব্রায়েনের সঙ্গে ৮৪ রানের জুটি গড়ার পথে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। ১২৪ বলে ১১ বাউন্ডারি আর ৪ ছক্কায় ১৩৫ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে শেষপর্যন্ত ফেরান জোনাথান কার্টার।
এরপর কেভিন ও’ব্রায়েনের ৪০ বলে ৬৩ (৩টি করে চার ছক্কায়) আর মার্ক অ্যাডায়ারের ১৩ বলে হার না মানা ২৫ রানের ইনিংসে বড় পুঁজি পেয়েছে আয়ারল্যান্ড।