শাড়ির আবেদন আমাদের দেশে চিরন্তন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পোশাক এসেছে ফ্যাশন বাজারে। যুগে যুগে বিবর্তন হয়েছে পোশাকের। কিন্তু শাড়ির জায়গা কোনো পোশাকের কারণে পিছিয়ে যায়নি। বরং এ দেশের মেয়েদের পছন্দের তালিকায় প্রথম রয়েছে শাড়ির অবস্থান। শাড়ির নকশায় তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। পাড়, আঁচল, নকশাতে নানা রকম ভিন্নতা দেখা গেলেও গঠনগত নকশায় তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।
তবে এবার শাড়িতেও পকেটের অস্তিত্ত পাওয়া গেছে। পকেট শাড়ি সম্পর্কে অনিন্দ্য শিরোনামের অনলাইন শপের স্বত্বাধিকারী এবং ডিজাইনার নীলিমা সরকারের কাছে তার সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, ‘সব সময় শাড়ি নিয়ে কাজ করি বলেই হয়তো এই ভাবনাটা মাথায় এসেছিল, শাড়ি পরতেও খুব ভালোবাসি; তবে শাড়ি পরে বাইরে দৌড়ে কাজ করা সম্ভব হয় না খুব একটা। আমার যে কাজ তাতে ফোন সব সময় কাছে রাখতে হয়, যেহেতু ব্যবসাটা অনলাইন বেইজড। একটা শাড়ি ডিজাইন করতে করতে জামার পকেট থেকে ফোন বের করছিলাম, তখনই মনে হচ্ছিল জামায় যদি পকেট থাকতে পারে, তাহলে শাড়িতে কেন পকেট থাকবে না, যারা সব সময় শাড়ি পরেন তাদের জন্য হয়তো শাড়ির পকেটটি কাজে আসতে পারে। এ ছাড়া এটি স্টাইলে ভিন্নমাত্রা যোগ করবে বলে মনে হচ্ছিল। মানুষ ব্যাপারটা কীভাবে নেবেন এত কিছু চিন্তা না করেই তখন শাড়ির পাড় লাগানোর জন্য যে কাপড় ব্যবহার করব তার থেকে কিছু অংশ কেটে পকেটের ফরমা বানিয়ে জুড়ে দিলাম শাড়িতে। তৈরি করে ফেললাম অনিন্দ্যর প্রথম পকেটওয়ালা শাড়ি। পকেট পোশাকে নিয়ে আসে ভিন্নমাত্রা।’
ছেলেদের পোশাকে এর ব্যবহারের ইতিহাস বহু বছরের। মেয়েদের পোশাকেও এর ব্যবহার নতুন নয়। পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেশ কিছু ফিউশনধর্মী পোশাকে ব্যবহার করতে দেখা গেছে দেশি ফ্যাশন বাজারের মূল ধারার হাউসে। কিন্তু তা বিপুল পরিমাণে নয়। বরং বলা যায় সীমিত আকারে। আবার অনেক মেয়ে তাদের প্রয়োজনে ফরমায়েশি পকেট তৈরি করে নেন দর্জির কাছ থেকে। মেয়েদের টপস এবং বটমে পকেটে সংযোজনের পরিমণ কম, কিন্তু শাড়িতে পকেটের ব্যবহার একদম দেখা যায়নি। অথচ বর্তমান সময়ে দরকারি বিভিন্ন কিছু সঙ্গে রাখা আবশ্যক। পকেটে অনায়াসে টাকা, মোবাইল, কার্ড জাতীয় হালকা বেশ কিছু জিনিস বহন করা যায়। শাড়িতে পকেটের কোনো ব্যবস্থা না থাকার কারণে আলাদা ব্যাগ ব্যবহার করতে হয়।
শাড়ি এ দেশের বিপুল পরিমাণ নারীর প্রতিদিন ব্যবহারের পোশাক। কর্মব্যস্ত এ সময়ে সহজে চলাফেরার জন্য শাড়িতে পকেট বেশ উপযোগী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ভিন্ন নকশার এ ধরনের শাড়ি বেশ খানিকটা সহজ করবে নারীর জীবনযাপনকে। সব সময় ব্যাগ বহন না করলেও চলবে।
প্রসঙ্গ যখন শাড়িতে পকেটের, তখন শুধু এর উপযোগিতা নিয়ে ভাবলে চলবে না। ভাবতে হবে সৌন্দর্য নিয়েও। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পকেট তৈরি করলে সেভাবে নজর কাড়বে না। যদি ফোকাস করতে চার পকেট, তাহলে ভিন্ন রঙ বেছে নিন। কিছু ক্ষেত্রে বিপরীত রঙ হতে পারে আপনার পছন্দ। কেননা বিপরীত রঙ খুব সহজে ফুটে থাকবে। শাড়ির পাড়ের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করতে পারেন পকেট। বেশ মানিয়ে যাবে।